বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কিশোরী মেয়েটিকে ট্রাকে তোলেন হেলপার। তারপর নির্জন স্থানে ট্রাক পার্কিং করে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে চালক ও হেলপার।
এভাবে তিনটি স্থানে তিন দফায় তাকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছেন ট্রাক চালক মেহেদী হাসান ও হেলপার তুহিন। রবিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের আদালতে ১৬৪ ধারায় পৃথকভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা এসব কথা বলেন। চালক মেহেদী হাসান নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আফতাব উজ্জামান ও হেলপার তুহিন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার উজ্জামানের আদালতে জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নাছির উদ্দিন সরকার জানায়, গত ১ আগস্ট রাতে গাজীপুর জেলার মাষ্টারবাড়ি এলাকা থেকে মালামাল ট্টাকে লোড করে সিদ্ধিরগঞ্জের পানিরকল এলাকাস্থ একটি কারখানার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ঐ ট্রাক। এরমাঝে রাত ৮টার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তায় ট্রাকটি (ঢাকা-মেট্রো ট-০২-০৩৪৪) পার্কিং করে তারা (চালক ও হেলপার) চা পান করে। এর অদূরে মেয়েটিকে একা পেয়ে হেলপার সোহান ওরফে তুহিন কিশোরীর সাথে আলাপ করতে থাকে। একপর্যায়ে হেলপার তুহিন ঐ কিশোরীকে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ট্রাকে তোলে।
এরপর চলন্ত ট্রাকে চালক মেহেদী কিশোরীর কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। এতে কিশোরী কান্নাকাটি করলে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে হত্যাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে চালক ও হেলপার ঐ কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এরপর তাদের ট্রাকটি সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় পৌঁছালে প্রথমে ট্রাক চালক ও পরে হেলপার ঐ কিশোরীকে পুনরায় ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে তারা ট্রাকটি নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের পানিরকল এলাকাস্থ একটি কারখানায় মালামাল ডেলিভারী করতে যায়। সেখানে পুনরায় ভোর ৪ টায় তারা ফের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে।
পরে ভোর সাড়ে ৫ টায় মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় মেয়েটিকে কান্নাকাটি করতে দেখে তাকে কান্নাকাটির কারণ জানতে চায়। এসময় মেয়েটি মুসল্লিদের সব খুলে বললে মুসল্লিরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়। এরই ফাঁকে চালক ও হেলপার কৌশলে গা ঢাকা দেয়। ঐ দিন কিশোরী নিজেই বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-(৫), তাং- ২/৮/২০১৭)। পরবর্তীতে ২ আগষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) আব্দুস সাত্তার অভিযুক্ত ট্রাক চালক মেহেদী হাছানকে (২৫) গ্রেফতার করে। ৩ আগষ্ট ভোর রাতে ট্রাক চালক মেহেদী হাসানকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নাসির উদ্দিন সাভার ফুলবাড়িয়া কাওয়ালীপাড়া মন্তাজউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ট্রাকের হেলপার মোঃ তুহিনকে গ্রেফতার করে।