এম এ কাহার বকুল;
লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ,
আমাদের দেশের সমাজে নারী নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটলেও এবার ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নে।
স্ত্রীর দেয়া গরম দুধে শরীরের একটি অংশ ঝলসে গেছে স্বামী মজমুল হকের (২৬)। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে আদিতমারী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত মজমুল উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের তালুক পলাশী গ্রামের মাজেদুল ইসলাম ওরফে মওলা বকস এর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৩আগস্ট) স্বামীর দায়ের করা মামলায় তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে (২২) তালুক পলাশী গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে আদিতমারী থানা পুলিশ।
জানাগেছে, গত ৪ বছর পূর্বে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা চাপারতল গ্রামের শরিফুল ইসলামের কন্যা সুফিয়া বেগমের (২২) সাথে বিয়ে হয় জেলার আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের তালুক পলাশী গ্রামের মজমুল হকের সাথে। এরপর মজমুল-সুফিয়া দম্পতির কোল জুড়ে আসে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। মেয়ের বয়স সাড়ে তিন বছর আর ছেলের বয়স এক বছর। অভাবের সংসারে মজমুল হক অটো চালিয়ে জীবন-যাপন করত। অটো চালাতে গিয়ে প্রায়ই গভীর রাতে বাড়ি আসত মজমুল। আর এ নিয়েই দীর্ঘদিন যাবত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া লেগেই থাকত।
এদিকে ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাত আটটার দিকে মজমুল অটো নিয়ে বাড়িতে ফিরেন। প্রচন্ড গরম থাকায় বাড়ির পাশের একটি দোকানে বসে গল্প করছিলেন তারই বড় ভাবীর সাথে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তার স্ত্রীর সন্দেহ হওয়ায় স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এরপর সেখান থেকে বাড়িতে গিয়ে মজমুল তার স্ত্রীকে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে চুলার উপর থেকে গরম দুধ তার স্বামীর শরীরে ঢেলে দেয়। এরপর এলাকাবাসী তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করান। গরম দুধে মজমুলের শরীরের গলার উপরিভাগ ঝলসে যায়।
আদিতমারী উপজেলা হাসপাতালের সহকারী চিকিৎসক আব্দুস ছালাম শেখ জানান, তার গলার ও শরীরের কিছু অংশ গরম দুধ ঢেলে দেয়ার কারণে ঝলসে গেছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।এ ঘটনার পর মজমুল হক বৃহস্পতিবার তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। স্বামীর মামলায় থানা পুলিশ তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে গ্রেফতার করেছে।আদিতমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ইসলাম জানান, মামলা দায়েরের পর পরই থানা পুলিশ তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে গ্রেফতার করেছে। আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেশ্বর রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।