মন্ত্রিসভা ও দল থেকে বরখাস্ত হওয়া আবদুল লতিফ সিদ্দিকী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে বর্তমানে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে অবস্থান করছেন। কোনো নির্দেশনা না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতেও পারছে না। আজ রবিবার রাতে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। পরে সেখান থেকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি বেরিয়ে যান। তিনি নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় এসেছেন বলে জানা গেছে। এর আগে, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে বের হবার পথে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে ঘিরে ধরেন। সেখানে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) নজরদারিতে রয়েছেন আওয়ামী লীগের এই সাবেক নেতা ও মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউ ইয়র্কে বসবাসরত টাঙ্গাইলবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন লতিফ সিদ্দিকী। এসময় তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কিভাবে চলবে? তারা তো ছিল ডাকাত। তখন সে একটা ব্যবস্থা করল যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী, জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী, তবে তার চেয়েও বেশি হজ ও তাবলিগ জামাতের।’ হজ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা বলেন, ‘হজের জন্য ২০ লাখ লোক সৌদি আরবে গেছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’ এ সময় তাবলিগ জামাতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাবলীগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদের তো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি।
এর পরই দেশে-বিদেশে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। সারা দেশে বিভিন্ন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয় এবং বেশকয়েকটিতে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও সমন জারি করেন। পরে তাঁকে মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই থেকে আর দেশে ফেরেননি লতিফ সিদ্দিকী। তিনি ভারতের অবস্থান করছিলেন বলে অনেকে দাবি করেন।