বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা। আজ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। ৬৪ বছরে পা রাখলেন তিনি। তবে জন্মদিনে কোনো ঘটা করে অনুষ্ঠান করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ববিতা গতকাল মানবজমিনকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আমি অসুস্থ। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। আর আমার ছেলে অনিক দেশের বাইরে আছে। ও দেশে থাকলে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে ভালো লাগে। ও যেহেতু কানাডায়, তাই মনটা খারাপ। তাই এবার ঘটা করে কোনো অনুষ্ঠান করছি না। আর জীবনের এই পর্যায়ে এসে এখন ভাবি জন্মদিন আসা মানেই জীবন থেকে একটা বছর চলে যাওয়া। এটা ভাবতে মন খারাপ হয়ে যায় আমার। নিরবে নিভৃতে এবারের জন্মদিনটি পালন করবো। ববিতা আরও বলেন, ডিসিসিআইআই (ডিসট্রেস চিলড্রেন ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল) পক্ষে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আমার জন্মদিনে ফুল নিয়ে প্রতি বছর বাসায় আসে। এবার শরীরটা ভালো না থাকার কারণে তাদেরকেও বাসায় আসতে না করেছি। কোনো অনুষ্ঠানই করছি না এবার। উল্লেখ্য, ববিতার ছোটবেলা কেটেছে যশোরে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় পপি (ববিতার ডাক নাম) ‘সংসার’ ছবিতে রাজ্জাক ও সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবির নির্মাতা ছিলেন জহির রায়হান। ছবিটি মুক্তি পায়নি। জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে ‘জ্বলতে সুরুজ কা নিচে’ নামে একটি উর্দু ছবির কাজ শুরু করেন। মাঝপথে থেমে যায় এই ছবিটিরও কাজ। এরপর জহির রায়হান রাজ্জাক ও ববিতাকে নিয়ে তৈরি করেন চলচ্চিত্র ‘শেষ পর্যন্ত’। আর এটিই ছিল ববিতার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। তারপর থেকেই ঢাকাই ছবিতে এই নক্ষত্রের উত্থান। আজও তিনি আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন অভিনয়ে। ববিতা প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ ছবির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনেও প্রশংসিত হন। ববিতা ২৫০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। আর এর মধ্যে ‘বাদী থেকে বেগম’ (১৯৭৫), ‘নয়নমনি’ (১৯৭৬), ‘বসুন্ধরা’ (১৯৭৭), ‘রামের সুমতি’ (১৯৮৫) এবং ‘পোকামাকড়ের ঘর বসতি’ (১৯৯৬) ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ববিতা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি নার্গিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’। এরপর আর কোনো নতুন ছবিতে দেখা যায়নি গুণী এই অভিনেত্রীকে। সবশেষ তিনি মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘এত প্রেম এত মায়া’ নামের একটি ছবিতে কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের (ডিসিআই)-এর শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও কাজ করেন ববিতা