হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলা কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ। এই দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন সিলেট-৫। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের ন্যায় এ অঞ্চলে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। গ্রামে গঞ্জে ও চায়ের স্টলে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা।
বিগত দিনে এলাকার উন্নয়ন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রার্থীদের যোগ্যতার বিভিন্ন দিক আলোচনায় স্থান পাচ্ছে।
এদিকে নানা কৌশলে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন আওয়ামীলীগ, বিএনপির ও জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মাধ্যে আওয়ামী লীগের হাফ ডজন, বিএনপির দুই ও জাতীয় পার্টির এক নেতা।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় তুঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও হুইপ সেলিমউদ্দিন এমপি এবং সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা, সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন (চাকসু মামুন)।
এ ছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক আহমদ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল-কবির, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল কাহির চৌধুরী।
উল্লেখ্য, সিলেট-৫(কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন কেন্দ্রীয় নেতা হাফিজ আহমদ মজুমদার। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আবারও এমপি নির্বাচিত হলে তার উন্নয়নের ছোঁয়া কানাইঘাট-জকিগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে। এতে সাধারণ মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। এ ছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থায় এ দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়নের পেছনে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত হাফিজ আহমদ শিক্ষা ট্রাস্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, দুবারের নির্বাচিত সাবেক এমপি হলেন হাফিজ আহমদ মজুমদার। তার গ্রহণযোগ্যতা ও পরিচিতি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে খুবই শক্তিশালী। এ আসনে দলীয় হাইকমান্ড তাকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ের ফসল সহজেই ঘরে তোলা যাবে।
এ ছাড়াও তৎপর রয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক আহমদ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবির, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুুল মুমিন চৌধুরী।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন এবারও তার প্রার্থিতার বিষয়টি স্থানীয় নেতাকর্মীর মনেপ্রাণে চাইছেন। তবে সেলিমউদ্দিনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজারে হওয়ায় এ আসনে তার প্রার্থিতার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতারা মানতে নারাজ।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ আসনের অন্তর্ভুক্ত এ দুই উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। এই জয়কে পুঁজি করে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন জেলা বিএনপির দুই নেতা। স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন তারা। একই সঙ্গে কেন্দ্রেও বিভিন্নভাবে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
মনোনয়নের প্রত্যাশায় মাঠে তৎপর রয়েছেন কানাইঘাট উপজেলা বিএনপি সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন (চাকসু মামুন); তার সঙ্গে মনোননয়ন দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল কাহির চৌধুরী।
পৌর বিএনপির সভাপতি কাউন্সিলর শরিফুল হক জানান, ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে মামলার ভয়ে গা-ঢাকা দেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এতে নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিলে তৃণমূলের কর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করে। দল অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা মামুনুর রশীদ মামুন নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান। শক্ত হাতে হাল ধরেন দলের। এরপরই আলোচনায় উঠে আসে তার নাম।
তিনি আরও বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ আসনের অন্তর্ভুক্ত কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলা দুটিতেই বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে।ফলে যোগ্য প্রার্থী মনোয়ন দিলে সহজেই বিজয়ী হওয়া সম্ভব।
.
বার্তা প্রেরক
হাফিজুল ইসলাম লস্কর
০১৬১১২৩৩২২৯