ভারতের কলকাতার সল্টলেক, টালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, রবীন্দ্রসদন, ধর্মতলা, বড়বাজার—এমন কোনো জায়গা এখন বাকি নেই, যেখানে গেলে শাকিব খানের দেখা মিলবে না। বাংলাদেশি এই জনপ্রিয় নায়কের নবাব ছবিটি ২৮ জুলাই কলকাতার শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। সারা কলকাতা এখন ছেয়ে গেছে নবাব-এর পোস্টার আর বিলবোর্ডে। তবে সেখানে শুধু শাকিবই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। বিলবোর্ডের কোথাও দেখা যায়নি যৌথ প্রযোজনার এই ছবির বাংলাদেশ অংশের পরিচালক ও প্রযোজকের নাম।
দেশের নায়কের পোস্টার ও বিলবোর্ডের স্থিরচিত্র পাঠিয়ে খবরটি প্রথম আলোকে জানান পরিচালক অনন্য মামুন। তিনি বলেন, ‘ভারতে এখন বাংলাদেশের নায়কের চাহিদা তৈরি হচ্ছে—এমন দৃশ্য দেখে সত্যি অন্য রকম আনন্দ হয়েছে।’
নবাব-এর নির্মাতা জয়দীপ মুখার্জির সঙ্গে কথা হয় গতকাল দুপুরে। শিকারীর নির্মাতাও তিনি। বাংলাদেশে যৌথ প্রযোজনা নিয়ে আন্দোলনের কারণেই কি এবার কলকাতার প্রচারণায় বেশি মনোযোগ? এমন প্রশ্নের জবাবে জয়দীপ বলেন, ‘আসলে বিষয়টা তা না। এটা ঠিক যে শিকারী মুক্তির আগে আমরা নবাব-এর মতো প্রচারণা করতে পারিনি। তখন আমাদের অন্য সিনেমার শুটিংয়ের ব্যস্ততা ছিল। এরপরও শিকারী আমাদের এখানে দারুণ ব্যবসা করে। শাকিব খানও সিনেমা দিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তার জানান দিয়েছেন। এখানকার জিৎ ও দেবের সিনেমার মতোই। তাই আমরা শাকিবের এবারের সিনেমা নিয়ে আরও বড় পরিসরে প্রচারণা চালাচ্ছি। সারা কলকাতার মানুষকে সিনেমাটা সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছি।’
দেড় যুগের অভিনয়জীবনে গত বছর প্রথম যৌথ প্রযোজনার সিনেমা শিকারী দিয়ে বাজিমাত করেন শাকিব। সে সময় কলকাতায় ১০৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল সিনেমাটি। আর নবাব এখন পর্যন্ত পেয়েছে ১১২টি প্রেক্ষাগৃহ। শাকিব খান বললেন, ‘দেশের বাইরে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাচ্ছি, ভাবতেই অন্য রকম আনন্দ লাগছে। দেশের মানুষের ভালোবাসা ও সিনেমায় আমার সহকর্মীরা আমাকে আজ এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে।’
কলকাতায় রাস্তায় পোস্টার, বিলবোর্ড ও হোর্ডিংয়ে শাকিব খানের আধিপত্য থাকলেও এসবের কোথাও দেখা যায়নি বাংলাদেশ–ভারতের যৌথ প্রযোজনার নামে নির্মিত নবাব সিনেমার বাংলাদেশ অংশের পরিচালকের নাম কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার টেলিফোনে হিমাংশু ধানুকা বলেন, ‘আমরা কিন্তু ইন্দো-বাংলাদেশ কো-প্রোডাকশন আর জাজ মাল্টিমিডিয়া লিখেছি। আর পরিচালক হিসেবে প্রধান যেহেতু জয়দীপ ছিলেন, তাই পোস্টার ও বিলবোর্ডে তাঁর নামই দেওয়া হয়েছে। তবে সিনেমার ক্রেডিট টাইটেলে দুজনের নামই থাকবে। আরও সহজ করে বললে দাঁড়ায়, আমরা পণ্য তৈরি করে প্রচারণা কেন করি, বিক্রি করার জন্যই তো। এখানে জয়দীপের নামটা বেশি বিক্রি হবে তাই তাঁর নাম দিয়েছি।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আবদুল আজিজ বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নাম আছে। পরিচালকের নাম কেন দেওয়া হয়নি, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে সামনে কথা বলব।’ তবে প্রযোজকদের বক্তব্যের সঙ্গে কয়েকটি বিলবোর্ডের ছবি মেলালে সেই তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিলবোর্ডে নেই বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা পরিচালকের নাম।
এবারের ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় নবাব। নবাব-এ শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন শুভশ্রী। ছবিটি প্রযোজনা করেছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ভারতের এসকে মুভিজ।