ভারি বৃষ্টিতে জলজট আর যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর জনজীবন। রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে যানযাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। সকালে ঘর থেকে বের হয়েই বিপাকে পড়েন কর্মমুখি মানুষ। যানবাহন না পেয়ে হেঁটে অনেকে গন্তব্যে যান। আর যারা যানবাহনে উঠেন তাদের পড়তে হয় সীমাহীন দুর্ভোগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে না পারে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে দেখা গেছে অনেককে। রাজধানীর মিরপুর থেকে সকালে বিপুল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ অফিস পাড়া মতিঝিল, পল্টন, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, এলাকায় যেতে বাসা থেকে বের হয়েই পড়েন বিপাকে। ওইসব এলাকায় যেতে কোন গণ পরিবহন ছিল না সকাল থেকেই। প্রধান সড়কে কোথাও কোমর, কোথাও হাঁটু পানি থাকায় ছোট যানবাহনও চলেনি। তাই অনেকে সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন। একই অবস্থা দেখা যায় মোহাম্মদপুর, শ্যামলী এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কে পানি জমে যানজট তৈরি হওয়ায় যানবাহন চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। প্রবল বৃষ্টিতে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউতেও হাঁটু সমান পানি জমে যায়। বাস চালকরা জানিয়েছেন, এতোদিন অনেক বৃষ্টি হলেও এখানে পানি উঠেনি। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আনিসুর রহমান জানান, সকালে বাসা থেকে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। এলাকার প্রধান খাল উপচে পানি উঠে পড়ে সড়কে। এতে হেঁটে রাস্তা পারেরও সুযোগ ছিল না। অনেক কষ্টে সাড়ে তিন ঘণ্টায় তিনি কাওরান বাজারের অফিসে আসেন। নারায়ণগঞ্জ ফার্মগেটের উদ্দেশে যাত্রা করে মৎস্য ভবন এলাকায় এসে আটকা পড়েন সাব্বির। তিনি বলেন, অনেক কষ্টে এ এলাকা পর্যন্ত এসে আর এগোতে পারিনি। রাস্তায় পানি আর পানি। পরে হেঁটে ফার্মগেটে যাই। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
এদিকে বিমানবন্দর সড়কে বনানীগামী রাস্তা যানজটে প্রায় অচল হয়ে থাকতে দেখা সকাল ১০টার দিকে। বাড্ডা থেকে পল্টনমুখি সড়কের স্থানে স্থানে পানি জমে যাওয়ায় ওই সড়কে ছিল দীর্ঘ যানজট। রাস্তায় গর্ত আর প্রতিবন্ধকতা থাকায় গাড়ি প্রায় হাঁটা গতিতে চলায় এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়। এদিকে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর অনেক এলাকার বাসা বা অফিসের নিচ তলা জলমগ্ন দেখা গেছে। এদিকে সচিবালয়ের দুই পাশের রাস্তায় পানি জমে থই থই করতে দেখা গেছে। পানি জমে সচিবালয়ের ভেতরের সড়কেও। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়কেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।