নিম্নচাপের ফলে বঙ্গোপসাগর অশান্ত থাকায় প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ইলিশ আহরণ বন্ধ রয়েছে। উত্তাল সাগরে টিকতে না পেরে গত ১০ জুলাই থেকে হাজার হাজার ফিশিং ট্রলার কূলে ফিরে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। ইলিশের ভরা মৌসুমে আবহাওয়ার এমন বৈরীতায় উপকূলীয় মৎস্য পল্লীগুলোতে নেই কোনো কর্মচাঞ্চলতা। অলস সময় কাটছে জেলেদের।
জেলে ও মহাজনরা জানান, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। সাগরেও প্রচুর মাছের সমারোহ রয়েছে। কিন্তু প্রচন্ড ঢেউয়ে সাগরে জাল ফেলার কোনো উপায় নেই। গত ১০ জুলাই থেকে উপকুলের হাজার হাজার ফিশিং ট্রলার বরফ, ডিজেল, খাদ্য সামগ্রী নিয়ে সাগরে যায়। সেখানে গিয়েই তারা নিম্নচাপের কবলে পড়ে। লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে বাধ্য হয়ে সাগর ছাড়তে হয়েছে। ফলে চলতি মৌসুমেও মৎস্য ব্যাবসায়ী ও জেলেদের চরম লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
জাতীয় মৎস্য সিমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন ও মৎস্য আড়ৎদার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ফরাজী জানান, গতবছর এমন সময় সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। কিন্তু এবার আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে সাগরে কোনো জেলেই টিকতে পারছেনা। প্রচন্ড ঢেউয়ের সঙ্গে টিকতে না পেরে ফিশিং ট্রলারগুলো পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী, দুবলারচর, ভেদাখালী, কটকাসহ বিভিন্ন খালে আশ্রয়ে রয়েছে। এছাড়া অনেক ট্রলার বরগুনার পাথরঘাটা, মহিপুর, আলীপুর, সখিনা এলাকায়ও আশ্রয় নিয়েছে।
তারা আরো জানান, ১৩-১৪ দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয়ে থাকা ট্রলারের খাদ্যসামগ্রীও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। চলতি মৌসুমও প্রায় শেষ হবার পথে। অথচ আশ্রয় নেওয়া ট্রলারগুলো ঘাটে ফিরে আসতে পারেনি। মহাজনেরাতো লোকসান গুণছেই- পাশাপাশি জেলে পরিবারগুলোতেও চলছে হাহাকার। দুই সপ্তাহ ধরে বেকার থাকা মৌসুমী জেলেরা চরম দুরাবস্থায় পড়েছে। সহসা আবহাওয়ার পরিবর্তন না ঘটলে ব্যাপকভারে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে মৎস্য সংশ্লিষ্টারা।
সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলে পল্লীর সিও আব্দুল হালিম ও সুপতি স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান জানান, সাগরের অবস্থা খুবই খারাপ। কোনো ফিশিং ট্রলার সাগরে নেই। সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে বহু ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রিত জেলেদের সব ধরণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।