বাবা অথবা মায়ের সাথে সন্তানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা প্রতিবারই দেখা যায়। এবার একটু ভিন্ন খবর পাওয়া গেল। ছোট বোন ও তাঁর সন্তানকে নিয়ে বড় বোনও পাস করেছেন এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়। অদম্য ইচ্ছা শক্তিই যে এনে দিতে পারে জীবনের সাফল্য। সেটাই প্রমাণ করেছেন তারা।
তবে আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে ছেলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছেলেকেই টপকে ভালো ফলাফল করেছেন মা শাহনাজ। আর শাহনাজকে টপকে আরো ভালো ফলাফল করেছেন তাঁর বড় বোন মমতা হেনা। এমন ফলাফলে আনন্দের জোয়ার এখন নাটোর শহরের মল্লিকহাটি এলাকার শাহজাহান আলীর বাড়িতে।
চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নাটোর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেড থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন শাহজাহানের নাতি ও শাহনাজের ছেলে রাকিব আমিন। তিনি পেয়েছেন জিপিএ ৩ দশমিক ৬৭।
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাস করেন শাহনাজ বেগম। তারপর আর পড়া হয়নি তাঁর। এক ছেলে ও এক মেয়ের মা শাহনাজ বেগম সন্তানদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে আবার পড়াশোনার প্রতি টান অনুভব করেন। তাই ২২ বছর পর আবার নাটোর মহিলা কলেজে এইচএসসি পরীক্ষায় বসেন এই মা। অর্জন করেন জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩।
একই সঙ্গে বসবাসকারী শাহনাজ বেগমের ফুপাতো বোন মমতা হেনা যখন দেখলেন তাঁর মামাতো বোন এতদিন পর আবার পড়াশোনা শুরু করেছেন, তখন তিনিও শুরু করেন পড়াশোনা। ১৯৯৩ সালে এসএসসি পাস করার ২৪ বছর পর আবার হাতে তুলে নেন বই। দুই বোন একই কলেজে কম্পিউটার অপারেশন ট্রেডে ভর্তি হয়ে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। মমতা হেনা অর্জন করেন জিপিএ ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট।
এদিকে একই পরিবারের এই তিনজনকে একসঙ্গে পাস করতে দেখে চমকে গেছেন অনেকেই। ফলাফল ঘোষণার পরপরই তাদের একনজর দেখতে অনেকেই ভিড় জমান শহরের মল্লিকহাটি এলাকায় তাঁদের বাড়িতে।