সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের খালপার গ্রামে এক অজ্ঞাত যুবকের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায় গত ৫ জুলাই। নিহত যুবক একজন সবজি বিক্রেতা। তার নাম রুহেল মিয়া, সুনামগঞ্জ সদরের পশ্চিম হাজীপাড়ার মৃত আব্দুল সোবহানের ছেলে।
সবজি বিক্রেতা রুহেল মিয়া খুনের নেপথ্যে পরকিয়া নাকি মাদক, খুনের ১২ দিনেও সে রহস্য উদঘাটিত হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউও গ্রেপ্তার হয়নি। তবে রুহেল খুনকে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। গুঞ্জন রয়েছে ওই গ্রামের একজনের স্ত্রীর সঙ্গে রুহেলে পরকীয়া প্রেম ছিল।
ঘটনার পর কেউ বলছেন, গ্রামের একজনের স্ত্রীর সঙ্গে সবজি বিক্রেতা রুহেল মিয়ার পরকীয়া প্রেম ছিল। তাকে গ্রামে ডেকে এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবার রুহেলের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, রুহেল ইয়াবা বড়ি সেবন করতেন, মাদক নিয়ে বিরোধেও বন্ধুদের হাতে খুন হতে পারেন রুহেল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ জুলাই মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের খালপার গ্রামে এক অজ্ঞাত যুবকের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, গ্রামের ভেতর তাকে মেরে হাত-পা ভেঙে লাশটি ধান খেতে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় কোনো নারীর সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেমের সুবাদে রুহেল খালপার গ্রামে এসে থাকতে পারেন। পরে তাকে আটকে বেঁধে হত্যা করা হতে পারে। নিহতের মুঠোফোনের ডায়ালে ওই রাত ও সকাল পর্যন্ত প্রায় ১২ জনের তালিকা পেয়েছে পুলিশ।
লাশ পাওয়ার পর এদের অনেককে কল করা হয়েছিল। কেউ আসেননি। একমাত্র সঙ্গের ব্যবসায়ী রুজন মিয়া আসেন লাশ শনাক্তে। তিনি লাশ দেখে চিনতে পারেন। রুজন মিয়ার কাছ থেকে নিহতের বড় ভাই সোহেল মিয়া খবর পেয়ে আসেন লাশ নিতে। এভাবেই অজ্ঞাত থেক রুহেলের পরিচয় পাওয়া যায়।
সোহেল জানান, নিহত রুহেল ইয়াবা নেশা করতেন। তার সাথে সাজু-উজ্জ্বল নামের দুজন বন্ধুও নেশা করতেন। ঘটনা দিন বিকেলে রুহেল ফোন করে বলেন, তিনি কাষ্টঘরে আছেন। তার বন্ধুরা তার পিছু ছাড়ছে না। এর পরে রুহেল এসে তাঁর কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেন সুনামগঞ্জে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য। এরপরে আর তাঁর গ্রামে যাওয়া হয়নি। লাশ মিলে দক্ষিণ সুরমায়। ঘটনার সঙ্গে মাদক নিয়ে কোনো বিরোধ আছে কিনা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শোনা যাচ্ছে ওই ধান খেতে ৪ জন লোক লাশটি ফেলার সময় গ্রামের দুজন লোক দেখেছিলেন। কিন্তু খুনিরা তাদের শাসিয়ে বিদায় দেয়। এরপর থেকেই নারীঘটিত ব্যাপারটি চাউর হয়।
নিহতের ভাই সোহেল মিয়া বলেন,‘ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে দাবি জানাই। যে কারণেই আমার ভাই খুন হোক, তার রহস্য বের দ্রুতত বের হওয়া প্রয়োজন।’
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. হারুনুর রশিদ জানান, ঘটনার বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মোবাইল ফোন থেকেও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। নিশ্চিত হয়েই আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।
.
বার্তা প্রেরক
হাফিজুল ইসলাম লস্কর
০১৬১১২৩৩২২৯