থানায় অভিযোগ জানিয়ে উল্টো পুলিশের কাছে লাঞ্চিত হতে হয়েছে এক স্কুলছাত্রীকে। এ অপমানে ক্ষুব্ধ হয়ে ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া ইতি আক্তার (১৩) নামের এক শিক্ষার্থী বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টা চালিয়েছে। ওই ছাত্রীকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবুল বাশারকে ক্লোজড করা হয়েছে। ঘটনাটি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার। সোমবার স্কুলছাত্রীর লাঞ্চিত ও বিষপানের ঘটনার পরে মঙ্গলবার আবুল বাশারকে লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজপাশা গ্রামের কাঠমিস্ত্রী আব্দুল মালেকের সাথে একই গ্রামের মানিক মৃধার সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মানিক ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে হয়রানি ও হুমকী দেয়ার বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মালেক পক্ষ। সোমবার সকালে ওই অভিযোগের বিষয়টি তদন্তে করতে ভান্ডারিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. আবুল বাশার ঘটনাস্থলে যান।
এ সময় আবুল বাশার অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে আব্দুল মালেক এবং তার দুই মেয়ে ইতি আক্তার ও হিরা আক্তারকে লোকজনের সামনে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায় স্কুল পড়ুয়া ওই দুই বোনকে চরিত্র নিয়ে খারাপ ইঙ্গিত করে গালি দেয়। এতে অপমানিত হয়ে ইতি আক্তার ঘরের মধ্যে কীটনাশক পান করে। স্বজনরা গুরুতর অবস্থায় ওই স্কুল ছাত্রীকে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং পরে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ফকরুল ইসলাম মৃধা জানান, ওই স্কুল ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে জরুরী ভিত্তিতে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা সংকটজনক। স্কুল ছাত্রীর বাবা আব্দুল মালেকের অভিযোগ, পুলিশের কাছে বিচার চেয়ে উল্টো আমার লেখাপড়া করা দুই মেয়ে অকথ্য গালিগালাজ ও অপবাদের শিকার হয়েছে। ওদের খারাপ মেয়ে মানুষ বলা হয়েছে। আমার মেয়ে এ দুর্ব্যবহার সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।
তবে অভিযুক্ত ভান্ডারিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আবুল বাশারের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তাদের সাথে কোন ধরণে দুর্ব্যহার করা হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় আবুল বাশারকে ক্লোজড করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী শাহনেওয়াজ। তিনি জানান, অধিকতর তদন্তের জন্য অভিযুক্ত এএসআই আবুল বাশারকে ক্লোজড করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।