মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি উপেক্ষা করার মতো নয়। দেশটির সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের তথ্য-অনুসন্ধানী (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) মিশনকে তদন্ত করতে দেয়া উচিত। এমন মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি। এ খবর দিয়েছে পিটিআই।
খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশটির রাখাইন রাজ্যসহ অন্যান্য অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ গত মাসে একটি কমিশন গঠন করে। কিন্তু মিয়ানমার ওই কমিশনের সদস্যদের মিয়ানমারে প্রবেশের জন্য ভিসা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
নিকি হ্যালি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। নিহত হয়েছেন অনেকে। এছাড়া, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুধু জাতিগত পরিচয় বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কেউ নির্যাতন বা বৈষম্যের শিকার হবে এটা ঠিক নয়। মিয়ানমার সরকারের উচিত এই তথ্য-অনুসন্ধানী মিশনকে কাজ করার অনুমোদন দেয়া।’ তিনি আরো বলেন, ‘জাতিসংঘ মিয়ানমারে যা ঘটছে তা উপেক্ষা করে যেতে পারে না। সরকার যাতে এই ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সমপূর্ণ সহযোগিতা করে সে জন্য আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন যদি তদন্ত না করতে পারে, তাহলে নির্যাতিতদের আসল সংখ্যা জানা যাবে না।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর জেনেভা শাখার পরিচালক জন ফিশার বলেন, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যদের ভিসার অনুমোদন না দেয়া মানে হচ্ছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়া মানুষগুলোর মুখে চড় মারা। তিনি বলেন, ‘অং সাং সু চি’র সরকার কি ওইসব ক্ষুদ্র, কলঙ্কজনক দেশগুলোর মতো হতে চায় যারা মানবাধিকার পরিষদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে? উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, সিরিয়া ও বুরুন্দি হচ্ছে মানবাধিকার বিরোধী দেশ। এই দেশগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে স্বাধীন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তদন্তে বাধা দিয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিয়ানমার সরকারও কি তাই করবে?’ জাতিসংঘের ধারণামতে, গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে ৯০ হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এদের বিপুল অংশ আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে।