ইমরুল কায়েসের ওয়ানডে অভিষেক হয় ২০০৮ এর ১৪ই অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ঠিক এক মাস পরই টেস্ট অভিষেক হয় এই ব্যাটসম্যানের। প্রায় ৯ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলছেন তিনি। তবে এ সময়ে বাংলাদেশ ৪৪ টেস্ট ও ১৪০ ওয়ানডে খেললেও ইমরুল কিন্তু সব খেলায় সুযোগ পাননি। কখনো ফর্মের কারণে, কখনো ইনজুরি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বাধা হয়ে এসেছে। আবার অনেকটা সময় দলে থাকলেও একাদশে জায়গা হয়নি তার। এই যেমন এ বছর আয়াল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দলের সঙ্গে থেকেও খেলা হয়নি কোনো ম্যাচ। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলা সুযোগ হয়েছে!
ইমরুলের এভাবে উপেক্ষিত হওয়ার কী কারণ? পারফরম্যান্স নাকি অন্য কিছু? গতকাল কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে বিব্রত দেখা গেছে ইমরুলকে। উত্তরটা ঠিক খুঁজেই পাচ্ছিলেন না তিনি। তারপরও বলেন, ‘ঠিক জানি না কেন। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানেরই দুর্বল ও শক্তির জায়গা থাকে। কোনো ব্যাটসম্যানই একটা জায়গাতে শতভাগ শক্তিশালী নয়। সবারই দুর্বল জায়গা থাকে। আমিও চেষ্টা করি যে জায়গাটায় দুর্বলতা আছে সে জায়গায় কাজ করার। কিন্তু কেন নিয়মিত হচ্ছি না জানি না। এটি আসলে ম্যানেজমেন্টের বিষয়। তারা যা ভাল বুঝবে তাই করবে।’
অবশ্য পরে ইমরুল বলেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট যখন চিন্তা করে একজন জেনুইন ব্যাটসম্যানের পরিবর্তে এমন একজন খেলাতে যার কাছ থেকে বোলিং সাপোর্টও পাওয়া যাবে, তখন হয়তো আমি বাইরে থাকি।’ আবার ওপেনিংয়ে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের কারণে দলে তার জায়গা নিয়মিত হতে কঠিন হচ্ছে তাও স্বীকার করেন। বলেন, ‘জাতীয় দলে ওপেনিংয়ের জায়গাটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। একটু খারাপ খেললেই ওখান থেকে বাদ পড়তে হয়। যে সুযোগ পায় সে-ই চেষ্টা করে জায়গাটি ধরে রাখার জন্য। আমিও আট বছর ধরে এ চেষ্টাই করছি। কিছু ম্যাচ ভালো খেলি, কিছু খারাপ করি, আবারও কামব্যাক করি। এগুলোর মধ্য দিয়েই চলছে। তারপরও চেষ্টা করছি আরও ভালো করার।’
তবে এভাবে দলের বাইরে থাকা আবার হুট করে একটি ম্যাচ খেলা বেশ কঠিক বলেই মনে করেন তিনি। এরপরও প্রফেশনাল ক্রিকেটার হিসেবে চেষ্টা করছেন নিজেকে মানিয়ে নিতে। তিনি বলেন, ‘শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়, আপনি হঠাৎ করে যদি একটা ম্যাচ খেলেন তখন কাজটা কঠিন হয়ে যায়। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এটার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া ভালো। মানসিকভাবে আমার মনে হয় এটার জন্য সবাই তৈরি থাকে, ভালো একটা সুযোগ পাবে এবং কাজে লাগাবে। আমার মনে হয় এ জিনিসগুলো ইতিবাচকভাবে চিন্তা করাই ভালো। একটা সুযোগ এলে সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা।’
আলোচনা হচ্ছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে উইকেটে খেলা হয়েছিল তেমন স্পিন সহায়ক উইকেট পেলে হয়তো অস্ট্রেলিয়াকেও হারানো সম্ভব। কিন্তু কিছুদিন আগেই ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা ভারতকেই ধরাশায়ী করেছে। অজিদের স্পিন চমকে হার হয় বিরাট কোহলিদের। তাই ভয় থাকছে স্পিন সহায়ক উইকেট বিপদও টেনে আনতে পারে। এ প্রসঙ্গে ইমরুল বলেন, ‘দেখেন ভারতের উইকেট আর আমাদের উইকেট এক নয়। ওদের এখানে রান তোলা খুব কঠিন। কিন্তু আমাদের এখানে রান করা সেই তুলনায় সহজ। তাই দলে যারা ব্যাটিং করার সুযোগ পাবেন তারা যেন বড় ইনিংস খেলে। যেমন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম সেঞ্চুরি করেছিল। মূল কথা সেট হলে বড় ইনিংস খেলতে হবে। আর ভারতে উইকেটে টিকে থাকা খুবই কঠিন।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্য মজা করেই বললেন ব্যাটিং সঙ্গে বোলিং করতে না পারলেও তিনি উইকেট কিপিংটা উপভোগ করেন। এর মানে কি কখনো উইকেট কিপার ব্যাটনসম্যান হিসেবেও সুযোগ পেলে খেলতে চান!