ইউনেস্কো ফিলিস্তিনি শহর হেবরনের পুরনো নগরকেন্দ্র এবং সেখানে অবস্থিত ‘টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক’কে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ বা বিশ্ব ঐতিহ্য বলে ঘোষণা দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির প্রতিবেশী বৈরীভাবাপন্ন দেশ ইসরায়েল।
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার এক বৈঠকে গোপন ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধির ভোটে এমন ঘোষণার পাশাপাশি ইউনেস্কো একই সঙ্গে এই জায়গাটিকে বিপন্ন ঐতিহ্যের একটি তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত করেছে। খবর বিবিসির।
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত হেবরনে প্রায় দুই লাখ ফিলিস্তিনির বাস। ইতোমধ্যে কয়েকশ’ ইহুদী সেখানে গিয়ে বসতি গেড়েছে। এই জায়গাটি নিয়ে অতীতে দুই দেশের মধ্যে বহুবার সংঘাত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, ইসরায়েল সেখানে যেসব তৎপরতা চালাচ্ছে, তাতে এটির ঐতিহ্য বিপন্ন হতে পারে।
বিসিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টম্ব অব দ্য প্যাট্যিয়ার্ক’ বা ‘আদি পিতাদের সমাধি’ বিশ্বের তিনটি প্রধান একেশ্বরবাদী ধর্ম- ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদী, সবার কাছে পবিত্র এক স্থান। এটি আব্রাহাম (ইব্রাহীম), আইজ্যাক (ঈসা)এবং জ্যাকবের সমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত। ইহুদীদের কাছে এটি দ্বিতীয় পবিত্রতম স্থান। আর ইসলামে একটি চতুর্থ পবিত্রতম স্থান।
ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করছে, ইসরায়েল সেখানে আন্তর্জাতিক আইন এবং রীতিনীতি লংঘন করে বিভিন্ন ঐতিহ্য ধ্বংস করছে, বাড়িঘরের ক্ষতি করছে। তারা এই শহরের ইসলামী ঐতিহ্যও ধ্বংস করে ফেলতে চাইছে।
টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক এখন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি তারা প্রতি বছর পর্যালোচনা করবে এবং এটি সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে।
তবে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “হেবরনের সঙ্গে ইহুদীদের সম্পর্ক হাজার হাজার বছরের। এটি হচ্ছে কিং ডেভিডের জন্ম স্থান, এখানে রয়েছে টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক। ”
ইউনেস্কোর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলি শিক্ষা মন্ত্রী নাফটালি বেনেট আরও বলেন,, ইউনেস্কোকে তার দেশের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের এক চুক্তির অধীনে হেবরনকে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। চুক্তির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল শহরটির ৮০ শতাংশ এলাকা থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করে। তবে, শহরের পুরোনো অংশ এবং টম্ব অব দ্য প্যাট্রিয়ার্ক ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।