বি.এম. রাসেল: অধিকাংশ মানুষের কাছেই উচ্চ বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ হলো, কোনো তথ্যকে দীর্ঘ সময় ধরে পরিষ্কারভাবে মনে করার ক্ষমতা। এমনকি নিউরোসায়েন্টিস্টরাও দীর্ঘ সময় ধরে এ ধারণাই পোষণ করে আসছিলেন। অন্যদিকে কোনো কিছু ভুলে যাওয়াকে মনে করা হতো মস্তিষ্কের তথ্য সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে অক্ষমতা হিসেবে। পুরনো এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবমস্তিষ্কের তথ্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্য কোনো স্মৃতির নিখুঁত জাবর কাটা নয়, বরং স্মৃতিভাণ্ডারের গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান অংশকে ব্যবহার করে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নেয়া। সে হিসেবে কোনো তথ্যকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মনে না রেখে প্রয়োজনীয় অংশটুকুকে কাজে লাগানোই উচ্চ বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ। খবর সায়েন্স ডেইলি।
কানাডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চের (সিআইএফএআর) দুই ফেলোর গবেষণায় উঠে আসে, মানুষের ভুলে যাওয়া স্বভাবের অর্থই হলো মস্তিষ্কের সংগ্রহ করা নিত্যনতুন তথ্যের ভিড়ে পুরনো স্মৃতিগুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্কের মূল কাজ তথ্যকে হুবহু মনে রাখা নয়। বরং এর গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান অংশগুলো কাজে লাগিয়ে সঠিক ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নেয়াটাই মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্য।
সিআইএফএআরের চাইল্ড অ্যান্ড ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো পল ফ্রাংকল্যান্ড ও লার্নিং ইন মেশিনস অ্যান্ড ব্রেইনস প্রোগ্রামের অ্যাসোসিয়েট ফেলো ব্লেক রিচার্ডস এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
গবেষকদ্বয়ের অন্যতম ব্লেক রিচার্ডস বলেন, ‘মস্তিষ্ক যেভাবে গুরুত্বহীন তথ্য ভুলে গিয়ে বাস্তব জীবনে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যের
ওপর জোর দেয়, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ভুলে যাওয়াটাও আমাদের মস্তিষ্কের প্রয়োজনীয় তথ্য পুনরুদ্ধারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।