স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব বিষয় জানিয়ে বলেন, ‘এটা কোনো ছোট বিষয় নয়। গত সোমবার শুধু তাঁর পরিবার নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্গ্রীব ছিলেন। যদি কেউ তাঁকে সীমান্ত পার করে দিতেন বা তিনি ওপার চলে যেতেন, তবে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতো, তা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। তখন নানা রকম ব্যাখ্যা আসত। তবে এখন পর্যন্ত ফরহাদ মজহারের কোনো দোষ সরকার খুঁজে পায়নি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বেলা তিনটায় যখন কথা বলেন, তখন ফরহাদ মজহারকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয় থেকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতে জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এখন ফরহাদ মজহারকে নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো তাঁকে গ্রেপ্তার করিনি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছিল। তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত থাকবে। আমরা সবার বক্তব্য নেব। তাঁর পরিবারের বক্তব্য, তাঁর বক্তব্য, তিনি যে দোকানে খেয়েছেন তার মালিকের বক্তব্য, বাসের চালকের বক্তব্য—সব নেওয়ার পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ ছাড়া আমাদের কাছে ফুটেজ, কল রেকর্ড তো আছেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাক্ষণই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর মোবাইল ফোন অনুসরণ করেছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, ফরহাদ মজহার নিজেই সবকিছু স্বীকার করবেন। যে হোটেলে তিনি খেয়েছেন, সেখানে কত টাকার বিল দেওয়া হয়েছে, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এখানে গোপন করার কিছু নেই। সব বের হয়ে আসবে আশা করি।’
আপনাদের কাছে তথ্য কী আছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁর স্ত্রী তাঁদের বলেছেন, ভোর চারটায় ফরহাদ কাজ করছিলেন। হঠাৎ করে সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁর স্ত্রী খেয়াল করলেন, তিনি বাড়িতে নেই। এরপর থেকে যতগুলো টেলিফোন তাঁর স্ত্রী পেয়েছেন, সবই তাঁর মুঠোফোন থেকে। চার-পাঁচবার ফোন এসেছে। মাঝে মাঝে ফোনটা বন্ধ ছিল। তাঁর ফোন থেকেই ৩৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। তিনি দুপুরে যে দোকানে খেয়েছেন এবং তাঁর আরিচা, মাগুরা পার হওয়ার ঘটনা পুলিশ অনুসরণ করেছে। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ওই ফোন থেকে যে কথাবার্তা হয়েছে, তার পুরোটাই পুলিশের কাছে রয়েছে।
আরিচা বা মাগুরায় যখন তাঁকে অনুসরণ করা হলো, তখন সেখানে কেন তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হলো না—এই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো জানি না, তিনি কোথায় আছেন। আমরা তখন তাঁর টেলিফোনের অবস্থান নির্ণয় করতে পেরেছি। পুলিশ তাঁর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পরে অভিযান চালিয়েছে।
ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন, আপনার অভিমত কী—জবাবে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত না করে আগেই এসব বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়।