সিলেট প্রতিনিধি :: “অপারেশন টোয়াইলাইটে জরাজীর্ন ‘আতিয়া মহল,
সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা চলছে। চলছে ১১১ ঘন্টার দুৎসহ স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা। কিন্তু চাইলেই কি মূছা যায়।
“অপারেশন টোয়াইলাইট,, ধবংস মৃতপ্রায় ও ঝাঁঝরা আতিয়া মহলের ভাঙা দেয়ালে ইটের গাঁথুনি দিচ্ছিলেন রাজমিস্ত্রি মনির মিয়া। তাঁর সঙ্গে কাজ করছিলেন আরও ছয়জন নির্মাণ শ্রমিক। মনির মিয়া কাজের ফাঁকে বলেন, বাড়িটি একেবারে জরাজীর্ন হয়ে গেছে। যেখানও হাত দেই, ভাঙতে অয়।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পাঠানপাড়ার পাঁচতলা এই বাড়িতে গত ২৩ মার্চ মধ্যরাতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। পরদিন থেকে শুরু হয় সেনাবাহিনীর ১১১ ঘণ্টার অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। অভিযান চলাকালে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় আতিয়া মহলের কিছু দূরে উৎসুক জনতার জটলায় দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরী আবু মো. কয়সরসহ ৭ জন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হন।
সেনাবাহিনীর অভিযানে বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া পরিবারগুলোর একটির সদস্য কানাইঘাটের সারোয়ার আলম বললেন, তাঁদের সারা জীবনের একটি দুঃস্বপ্ন আতিয়া মহল। ওই ভয় সারা জীবনই তাড়িয়ে বেড়াবে।
ওই অভিযানে নিহত হয় নারীসহ চার জঙ্গি। ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর অভিযান সমাপ্ত হলে আতিয়া মহলকে বিস্ফোরকমুক্ত করতে ‘অপারেশন ক্লিয়ারিং’ শুরু করে র্যাব। ১২ এপ্রিল বিস্ফোরকমুক্ত করে ফ্ল্যাটগুলো ভাড়াটিয়াদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ভাড়াটেরা নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেয়।
ওই বাড়ির নিচতলায় ছিল জঙ্গিরা। সেখানকার কক্ষগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজমিস্ত্রি মনির মিয়া বলেন, বাড়িটির মূল কাঠামো এখনো যথাযথ থাকায় সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা চলছে।
বাড়ির ভেতরে নিচের দুই ফ্ল্যাটে ঢোকার মুখে কালো কালিতে লেখা রয়েছে ‘অনিরাপদ’। তবে বাকি ফ্ল্যাটে ‘নিরাপদ’ লেখা।
বাড়ির মালিক উস্তার আলী বলেন, অভিযান শেষে আতিয়া মহল বিস্ফোরকমুক্ত করতে র্যাবের অভিযান চলাকালে এ সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।
ওই ঘটনায় দক্ষিণ সুরমা থানায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ বিষয়ে পিবিআইয়ের সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান বলেন, আতিয়া মহলে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে একজনের পরিচয় মিলেছে। বাকিদের ডিএনএ নমুনা মেলেনি।
আতিয়া মহল দেখতে সবসময় মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। উৎসুক লোকজন আতিয়া মহল নামক বাড়িটি দেখতে আসা এবং সেলফি তোলা এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গেছে।