ঢাকা: মানুষকে নাড়ির টান আটকে রাখতে পারছে না। তাই ঘরমুখো মানুষ বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ছুটছেন আপন মনে। শনিবার রাস্তায় রাস্তায় দেখা গেছে ব্যাপক জনস্রোত। এই স্রোত বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট আর রেলস্টেশনের দিকে। ট্রেন, বাস, লঞ্চ ও বিমানে যে যেভাবে পারছেন বাড়ির দিকে ছুটছেন। কোথাও ঠাঁই নেই। পথে পথে রয়েছে হাজারো কষ্ট, দুর্ভোগ, তবুও ঈদ আনন্দ যেন শেকড়ে। কোথাও কোথাও ছিল যানজট। অনেক যাত্রীর সময়মতো টিকিট না পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অহরহ অভিযোগ করেছেন বহু যাত্রী। এমন আরো অনেক বাধা থাকার পরও বাড়ি ফিরছেন মানুষ। এক্ষেত্রে সড়ক, রেল, নৌপথের পাশাপাশি মানুষ ব্যবহার করছেন বিমানপথও। চিরচেনা এই শহর এখন অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আজ রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায় দেশের সব রুটে। সড়কগুলোতে কোথাও যানজটের কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো আবার রাজধানীতে ফিরতে অনেকটা দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার মাস্টাররা। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মহাসড়কের কোথাও কোথাও খুবই ধীরগতিতে চলছিল যানবাহন। এ অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল দূরপাল্লার যাত্রীদের। অন্যদিকে কমলাপুর এবং এয়ারপোর্ট স্টেশনে হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষার প্রহর গুনছেন বাড়িতে যাবার আশায়। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রেনগুলোতে প্রচন্ড ভিড়। ছাদে চড়ে ও দরজায় দাঁড়িয়ে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরছেন মানুষ। ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই নেই অবস্থা। বাধ্য হয়ে মানুষ প্রখর রোদের মধ্যে ট্রেনের ছাদে চড়ে পলিথিন মুড়িয়ে বসেন। ট্রেনের দরজায় ঝুলে, ছাদে উঠে অনেকে গন্তব্যে গেছেন অনেকে। ভিড়ের কারণে কেউ কেউ চেষ্টা করেও ট্রেনে উঠতে পারেননি। আর টিকিট করে সিট পেলেও অনেকে সিট খোঁজে পাননি। এদিকে আজ ভোর থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ছিল গ্রামমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও তীব্র আকার ধারণ করে। যাত্রী বেশি থাকায় লঞ্চগুলো তাড়াতাড়ি ঘাট ছেড়েছে। সিট পাওয়ার জন্য অনেকেই রাত কাটিয়েছেন টার্মিনালে। এমন একজন ভোলাগামী যাত্রী বিল্লাল হোসেন। তিনি থাকেন নরসিংদী। গত শুক্রবার রাতে এসে টার্মিনালে ঘুমান। কারণ হিসেবে বললেন, সিট না পেলে অনেক কষ্ট হয়। তার পক্ষে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার কেবিন নিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়। তাই ভোরে শ্রীনগর লঞ্চ টার্মিনালে এলেই দ্রুত তিনি ডেকে বেডসিট বিছিয়ে সিট করেন। এই লঞ্চ সকাল ৭টার দিকে ভোলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তিনি বলেন, বাড়িতে যেতে কষ্ট হলেও গ্রামে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ অন্যরকম মজা। এদিকে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী প্রায় সব লঞ্চের ছাদে যাত্রীদের দেখা গেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান, সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করে। বিকালে ভিড় বেড়ে যায়।