ঢাকা: শিক্ষিকা আমিনা নাজম খান (৩৬)। বিবাহিতা। শিক্ষকতা করেন লন্ডনের ব্র্যাডফোর্ডের টং হাই স্কুলে। এখানেই সরাসরি তার এক ছাত্রকে ভালো লেগে যায়। বয়সে তার অর্ধেক হলেও ওই ছাত্রকে কাছে পেতে উতলা হয়ে পড়েন তিনি। আস্তে আস্তে তাকে নিজের ফর্মুলায় নিয়ে আসেন। তাকে উত্তেজিত করতে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে নিজের নগ্ন ছবি ও রগরগে সব মেসেজ পাঠাতে থাকেন। ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। তাদের সম্পর্ক গড়িয়েছে বিছানায়। একবার দু’বার নয়, অনেকবার। ৯ মাস ধরে চলেছে তাদের অবাধ মেলামেশা।
শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ার পর ওই শিক্ষিকাকে স্কুল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়, শিক্ষিকা নাজম খান যে ছাত্রকে তার শিকারে পরিণত করেছিলেন তার বয়স ১৮ বছর। তিনি ভালোবেসে ওই ছাত্রের নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য এ টিম’। আর নিজেকে নাজম খান নাম দেন ‘বেবি’। ব্র্যাডফোর্ডে সরাসরি তাকে পড়ানোর ফাঁকে এসব চলতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে চলে তাদের আদিম উন্মত্ততা। এ বিষয়টি নিয়ে আচরণগত প্যানেলের কাছে নালিশ গেছে। তারাই তদন্ত করে এসব তথ্য ফাঁস করেছেন মিডিয়ার কাছে। ঘটনায় মামলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে নাজম খানের শিকার ছাত্রটির বয়স হয় ১৮ বছর। প্যানেল তদন্ত করে দেখেছে, নাজম খান ব্র্যাডফোর্ডের ওই স্কুলে ২০০৯ সাল থেকে কর্মরত ছিলেন। এ সময়ে তিনি তার ‘দ্য এ টিম’কে অনেকবার হোটেল রুমে নিয়ে গিয়েছেন। এছাড়া দূরে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছেন দুজনে। তবে কে সেই হোটেলের বিল দিয়েছেন তা পরিষ্কার নয়। স্কুলের তদন্তকারীদের কাছে ওই ছাত্র বলেছেন, আমরা খাবার খেতে বাইরে বেরিয়ে যেতাম। তিনি (নাজম) কখনো আমাকে কোনো কিছুর বিল দিতে দিতেন না। ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচিং অ্যান্ড লিডারশিপে এক শুনানিতে ওই ছাত্র আরো বলেছেন, একদিন আমরা একটি রেস্তরাঁয় খেতে যাই। তখন ওই রেস্তরাঁয় উপস্থিত ছিল আরো একজন ছাত্র। সে আমাদের দেখে ফেলে। এরপর চারদিকে ছড়ায় কাহিনী।
ছাত্র-শিক্ষিকার এই অনৈতিক প্রেম চলতে থাকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময়ে একদিন ওই স্কুলের একজন কর্মকর্তার কাছে একটি ই-মেইল যায়। তাতে চলমান এসব ঘটনার বর্ণনা ছিল। কিন্তু শিক্ষিকা নাজম মিথ্যা কথা বলে অভিযোগ ঢাকার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। নাজম তার প্রেমিকের সঙ্গ ত্যাগ করেন। তিনি একদিন ওই ছাত্রকে মেসেজ পাঠান ‘এখন থেকে আমাদের সম্পর্কের কথা তুমি কারো সঙ্গে আলোচনা করবে না। আমি আরো তোমাকে অনুরোধ করছি আমার সব ছবি মুছে দাও। আমার দেয়া মেসেজগুলোও মুছে দিও। কারণ, আমি চাই না স্কুল কর্তৃপক্ষ এগুলো হাতে পেয়ে আমাদেরকে আরো বিব্রতকর অবস্থায় ফেলুক’।
শুনানিতে তার প্রেমিক, ছাত্র কি বলেছে, তার একটি কপি চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অনেকবার আবেদন করেছেন নাজম খান। কিন্তু তাকে তা দেয়া হয় নি। ওদিকে প্রেমিকরূপী ছাত্র আরো বলেছেন, শিক্ষিকা নাজম খান তাকে উপহার দিয়ে ভাসিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে হুগো বস ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি, কনসার্টের টিকিট। তবে তার এসব দাবিকে আমলে নেয় নি ট্রাইব্যুনাল। তারা বলেছে, ‘দ্য এ টিম’ নামধারী ওই ছাত্র এখন তার শিক্ষিকার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার কারণে তার ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এসব বলছে। তবে সবকিছু যাচাই বাছাই করে ওই শিক্ষিকাকে স্কুল থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০১৬ সালের মার্চ থেকে আর স্কুলে যান না শিক্ষিকা নাজম খান।