গতকাল সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে আন্তোনিও গুতেরেস এ আশাবাদ তুলে ধরেন। আজ মঙ্গলবার জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শান্তিরক্ষা ও শান্তি নির্মাণে ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অন্যতম বৃহৎ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনের সময় অনুষ্ঠেয় ‘সার্কেল অব লিডার’ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
জাতিসংঘের মূল্যবোধ ও নীতিমালার প্রতি বাংলাদেশের অবিচল অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মহাসচিবের অগ্রাধিকার প্রদানের প্রশংসা করেন তিনি। বিগত আট বছরে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নে যে অগ্রগতি সাধন করেছে, পররাষ্ট্রসচিব সে বিষয়ে মহাসচিবকে অবহিত করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধ অপরাধবিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের বিতর্কে অংশ নেন। পররাষ্ট্রসচিব তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ‘ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম’ মোকাবিলায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। অধিকতর নজরদারি ও কার্যকর বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবৈধ অভিগমন ও মানব পাচার এবং চোরাচালানের প্রবণতা অনেকাংশে কমেছে।
শহীদুল হক বলেন, ‘আমরা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি এবং এটিকে শক্তিশালী করেছি। মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন মোকাবিলায় আমাদের টেকসই উদ্যোগগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃত পেয়েছে।’
মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, বন্য প্রাণী ও সাংস্কৃতিক সম্পদের অবৈধ পাচার রোধে কার্যকর আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর পররাষ্ট্রসচিব গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ‘ডার্ক ওয়েব’-এর বিস্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা প্রায়ই সন্ত্রাসী ও সহিংস চরমপন্থীরা তাদের কাজে ব্যবহার করে থাকে।