প্রথমে আলাদা কমিশনের অধীনে অনলাইন গণমাধ্যম চলবে বলে আলোচনা ছিল। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণের জন্য আলাদা নিবন্ধন লাগবে না। তবে নতুন যেকোনো অনলাইন গণমাধ্যমকে নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধন করতে হবে।
জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গতকাল রোববার রাতে বলেছেন, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য আজ সোমবারের মন্ত্রিসভায় উঠছে। অনুমোদন পেলে সেটি সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইন নীতিমালা চূড়ান্ত করতে মাস কয়েক আগে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে অংশীজনদের সঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অংশীজনদের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন থাকলে ওই পত্রিকার অনলাইনের জন্য আলাদা নিবন্ধন থাকার যুক্তি নেই। সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নোয়াবও পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের জন্য নিবন্ধন প্রয়োজন নেই বলে মত দিয়ে আসছে। জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পেলে বিষয়টি সবাইকে জানানো হবে।
তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ জানিয়েছেন, নীতিমালার খসড়াটি তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইন গণমাধ্যমকেও তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের ভাষণসহ সরকার অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করতে হবে। অশ্লীল, হিংসাত্মক, সন্ত্রাসমূলক এবং দেশীয় সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কোনো তথ্য-উপাত্ত বা দৃশ্য প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন তথ্য ফাঁস করা যাবে না। ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত সৃষ্টি করতে পারে, আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে উৎসাহ প্রদান করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি করে এমন ধরনের তথ্য ও উপাত্ত প্রচার করা যাবে না। সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত দায়িত্বশীল অন্য কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রূপ বা অবমাননা করা যাবে না। অপরাধ নিবারণ ও নির্ণয়ে অথবা অপরাধীদের দণ্ড বিধানে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের হাস্যকর করে এবং তাঁদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে এমন তথ্য প্রচার করা যাবে না।
জানতে চাইলে অনলাইন নীতিমালার খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় জড়িত তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম অনলাইনের জন্য আলাদা কমিশন করতে। কারণ এই মাধ্যম ও সম্প্রচার মাধ্যমের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে যতটুকু জেনেছি, সম্প্রচার কমিশনই অনলাইন গণমাধ্যম দেখভাল করবে। আমাদের খসড়া সংযোজন ও বিয়োজন হয়ে এখন কোন পর্যায়ে চূড়ান্ত হচ্ছে, তা জানি না।’