দায়িত্ব পালন অবস্থায় ৮ বছরে ৬৪৯ পুলিশ সদস্য নিহত

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

FB_IMG_1497242519496(1)

 

 

 

 

 

 

২০০৯ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত ৮ বছরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় ৩ হাজার ৯৬৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ৬৪৯ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে দায়িত্বরত অবস্থায় ৩ জন বিজিবি সদস্য নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার সময়ই সবচেয়ে বেশি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে মহিলা আসনের পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে  এ তথ্য জানান। মন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালে পুলিশ সদস্য আহত হন ১২৫ জন ও নিহত হন ২৮ জন। ২০১০ সালে ১৭৬ জন আহত ও ৪০ জন নিহত হন। ২০১১ সালে ১৯০ জন আহত ও ৫১ জন নিহত হন। ২০১২ সালে ২০৫ জন আহত ও ৩৮ জন নিহত হন। ২০১৩ সালে ২ হাজার ২১০ জন আহত ও ১০৯ জন নিহত হন। ২০১৪ সালে ২৮১ জন আহত ও ১০২ জন নিহত হন। ২০১৫ সালে ৩৭২ জন আহত ও ১২৬ জন নিহত হন। ২০১৬ সালে ২৫৯ জন আহত ও ১২৮ জন নিহত হন। ২০১৭ সালের মে পর্যন্ত ১৫০ জন আহত এবং ২৭ জন নিহত হয়েছেন।
জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ রোল মডেল: সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সফুরা বেগমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকার সন্ত্রাসী হামলাকারীদের খুঁজে বের করার ব্যাপারে যে দৃঢ়তা দেখাচ্ছে তাতে দেশ ও বহির্বিশ্বে সরকারের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এ পর্যন্ত ৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্তব্যরত অবস্থায় বিএনপি-জামায়াত-শিবির-হেফাজতের দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসী জঙ্গীদের হামলায় বিভিন্ন পদবির নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে একজনের পরিবারকে ১৬ লাখ, একজনের পরিবারকে ১৬ লাখ, ১৭ জনের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ টাকা করে, চারজনের  প্রতিটি পরিবারকে আট লাখ এবং দুইজনের প্রত্যেক পরিবারের অনুকূলে পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, ২০১৩ সালের ৫ মে’র হেফাজতের তাণ্ডবে তাদের কর্মীদের দ্বারা ঢাকায় কর্মরত কনস্টেবল মোহাম্মদ পিয়ারুল ইসলামকে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা ও আন্তরিকতায় এয়ার এম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তার চিকিৎসা বাবদ প্রধান মন্ত্রীর কল্যাণ ও ত্রাণ তহবিল থেকে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যায় করা হয়েছে। এ ব্যায় ছাড়াও নিহত ও আহত পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন কল্যাণ তহবিল থেকে বিধি মোতাবেক আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে এবং পারিবারিক পেনশন দেয়া হয়েছে। এছাড়া  ২০১৩ সালের ৬ মে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ হতে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে হেফাজত কর্মীদের আকস্মিক হামলায় নিহত বিজিবি’র দুই সদস্যর প্রতিটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা, বিজিবি মহাপরিচালকের তরফ থেকে ৫ লাখ টাকা ও বিজিবি’র উত্তরা মার্কেটে প্রতিটি পরিবারকে একটি করে দোকান দেয়া হয়েছে। এছাড়াও পরিবার দুইটিকে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকেও এক লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে।
জাতির পিতার খুনি: আওয়ামী লীগের শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতার খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্স দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী আরো জানান, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে নতুনভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করা হয়। টাস্কফোর্স ইতিমধ্যে একাধিক সভায় মিলিত হয়েছে। পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব জব্দের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উভয় দেশের ল’ ফার্ম নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খুনিদের ছবি সংবলিত তথ্য প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *