ঢাকা:আগুনের গোলায় পরিণত হওয়া লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আর্তনাদ, কান্নার শব্দ। জীবন বাঁচানোর করুণ আকুতি আসছে ওই ভবনের ভিতর থেকে। কিন্তু বাইরে অসহায় স্বজনরা ও অগ্নিনির্বাপণকারীরা। কারো যেন করার কিছু নেই। সর্বগ্রাসী আগুন ঢেকে দিয়েছে ২৭ তলাবিশিষ্ট ওই টাওয়ারকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পুরো ভবনই এখন আগুনের গোলা। যেকোনো সময় বিশাল এই ভবন ধসে পড়তে পারে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য টেলিগ্রাফ। এতে বলা হচ্ছে, অবিশ্বাস্য গতিতে ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সময় গত রাত ১টার দিকে এর সূত্রপাত। ফলে অনেক মানুষ তখন ঘুমে। তারা এর ভিতর আটকা পড়ে আছেন বলে উদ্বেগ জানাচ্ছেন স্বজনরা। আটকা পড়া ওইসব মানুষের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায় নি। অকস্মাৎ ভবনটির এক পাশ থেকে অগ্নিকা-ের সৃষ্টি হয়। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সব দিকে। ফলে সবাই বেরিয়ে আসতে পারেন নি সেখান থেকে। এই মুহূর্তে সরাসরি সম্প্রচারে যে দৃশ্য দেখানো হচ্ছে তাতে ভবনটি কয়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। তার ভিতর দাউ দাউ জ্বলছে আগুন। অগ্নিনির্বাপণকারী ও সংশ্লিষ্টদের প্রাণপণ চেষ্টাকে হার মানাচ্ছে এ আগুন। আকাশের এত উপরে শিখা উঠে গেছে যে, কয়েক মাইল দূর থেকেও তা দেখা যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ নিয়ে টুইট করছেন। ফাবিও বেবের লিখেছেন, ভবনটির একপাশে যখন আগুন লাগে তখন অন্যপাশ থেকে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ ভেসে আসছিল। কেউ কেউ বেডশিটে শরীর ঢেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।
অন্যরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে টর্চ লাইট বা মোবাইল ফোনের লাইট জ্বালিয়ে অগ্নিনির্বাপণকারী বা উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। চ্যানেল ফোর-এর অ্যামেজিং স্পেসেস অনুষ্ঠানের উপস্থাপক জর্জ ক্লার্ক বলেন, আমি সাইরেনের শব্দ শুনতে পেলাম। মনে হলো গাড়ির হর্ন বাজছে। ঘটনাস্থল থেকে আমি প্রায় ১০০ মিটার দূরে। কিন্তু ততক্ষণে ছাইয়ে ঢাকা পড়েছি আমি। আমি দেখতে পাই কেউ ভবনটির একদম উপরতলা থেকে টর্চ জ্বালিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। নিশ্চয় এ মানুষগুলো সেখান থেকে বেরুতে পারেন নি। তাদের কি অবস্থা হয়েছে কেউ বলতে পারছেন না এখন এই মুহূর্তে। অভিনেতা, লেখক টিম ডাউনি বসবাস করেন এই টাওয়ারটির পাশেই। তিনি বলেন, মুহূর্তেই পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সারাটা ভবনকে গ্রাস করেছে আগুন। ভয়াবহভাবে পুড়ে গেছে এ ভবন। আমার জীবনে আমি এমন ঘটনা দেখিনি। চারদিকে পোড়া গন্ধ। সব কিছু পুড়ছে। আর তাপ? ধারে কাছে ঘেঁষা যায় না।