এরপর আর কী! অপেক্ষা আর অপেক্ষা। দুই দল অপেক্ষায় ড্রেসিংরুমে। সাংবাদিকেরা প্রেসবক্সে। বৃষ্টি শেষ পর্যন্ত ম্যাচটির অপমৃত্যুই ঘটাল। লন্ডন সময় ৯টা ১৭ মিনিটে পরিত্যক্ত হওয়ার ঘোষণা যখন এল, গ্যালারিতে তখন হাতে গোনা কয়েকজন দর্শক। কী আশায় যে তারা বসে ছিলেন! খেলা আবার শুরু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তো বলতে গেলে জাগেইনি। কেন বসে ছিলেন, তা বোঝা গেল তাঁদের হর্ষধ্বনিতে। সবাই বাংলাদেশি দর্শক, প্রায় নিশ্চিত পরাজয় থেকে বেঁচে যাওয়ার আনন্দটা পেতে ঘোষণাটা নিজের কানে শোনার জন্যই হয়তো অপেক্ষায় ছিলেন তারা।
ম্যাচটা ‘অস্ট্রেলিয়া বনাম বৃষ্টি’ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ইনিংসের পরই। অস্ট্রেলিয়াকে হতাশায় ডুবিয়ে তাতে বৃষ্টিই জিতল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে স্টিভ স্মিথের দলকে। তবে সেদিন ম্যাচের যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে খুব একটা মন খারাপ করার কথা নয় তাদের। কিন্তু কাল বৃষ্টিকে নিশ্চয়ই শাপশাপান্ত করেছে তারা। দুই ম্যাচে ২ পয়েন্ট। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিটরা এখন গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কায় আক্রান্ত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা এখন ‘জীবন-মরণ’, হারলেই ‘বিদায় অস্ট্রেলিয়া!’
পুরো খেলা হলে হয়তো অস্ট্রেলিয়াই জিতত। বাংলাদেশের ১৮২ রান টপকানো কি আর ব্যাপার হতো নাকি! পুরো খেলা হওয়ারও দরকার ছিল না। আর মাত্র চারটি ওভার খেলা হলেই অস্ট্রেলিয়ার কাজ হয়ে যেত। অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসের ১৬ ওভার পর যখন খেলা থামিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি, অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১ উইকেটে ৮৩। ডাকওয়ার্থ-লুইসে ম্যাচ জিততে ২০ ওভার শেষে যা প্রয়োজন ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি রান তখনই হয়ে গেছে। ওই চার ওভার খেলা হলে আরও দুই-তিনটি উইকেট পড়লেও কোনো সমস্যা হতো না। ৪ উইকেট পড়ে গেলেও জিততে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হতো ৮৫ রান। ৮৩ তো তারা করেই রেখেছিল।
বৃষ্টি ‘এ’ গ্রুপের সমীকরণটাও পুরো বদলে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এখন ঘোর বিপদ আর হঠাৎই দপ করে জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশের নিভু নিভু সম্ভাবনার প্রদীপটা। শর্ত একটাই, শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে হবে নিউজিল্যান্ডকে আর ইংল্যান্ডকে জিততে হবে বাকি দুটি ম্যাচ। তাহলেই বাংলাদেশ সেমিফাইনালে!