নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে বিয়ে পড়ানোর একদিন পরই সন্তান প্রসব করেছেন কথিত স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (১৮)। শুক্রবার রাত ২টার দিকে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন সোনিয়া। বৃহস্পতিবার রাতে নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বাসভবনে ডেকে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনিয়াকে বিয়ে দেওয়া হয় হাসিব মাল নামের ১২ বছরের পঞ্চম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রর সঙ্গে। তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় বিয়ের কাবিননামা বাতিল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কাজি আলতাফ হোসেন।
বিয়ের একদিনের মাথায় সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার সকাল থেকেই এলাকার লোকজন ভিড় করছেন এই নবজাতককে একনজর দেখার জন্য। অন্যদিকে কথিত বর উমাজুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম মালের ছেলে হাসিব মাল এই বিয়ে ও সন্তান কোনো অবস্থাতেই মেনে নিতে পারছে না। হাসিবের দিনমজুর বাবা বলেন, আমি গরিব-অসহায়। মামলা চালানোর সামর্থ্য নেই। তাই স্থানীয় লোকজন ও চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিয়ে মেনে নিয়েছি। দুই মাস আগে একটি সালিসি বৈঠকে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন ইউপি সদস্য মো. আলম মৃধা। ওই টাকা দিতে না পারায় সোনিয়াকে আমার শিশু ছেলের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী সোনিয়াকে বিয়ে দেওয়া হয় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হাসিবের সঙ্গে। নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাচ্চুর নির্দেশে কাজি আলতাফ হোসেন বিয়ে পড়ান। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্যে কাবিননামায়ও স্বাক্ষর নেওয়া হয় অনেকের। এ বিষয়ে কাজি আলতাফ হোসেন বলেন, আমার দপ্তরের ২৬ নম্বর রেজিস্ট্রারের ৯৬ নম্বর পৃষ্ঠায় সোনিয়া ও হাসিবের বিয়ের তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় ওই কাবিননামা বাতিল করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু বলেন, ছেলে ও মেয়ে উভয়ই খুব গরিব। দুজনের শারীরিক সম্পর্কে ওই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। তাই বিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিয়ে পড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন। বর হাসিব অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইঝি সম্পর্কের ওই মেয়ের কাছে অনেকে আসা-যাওয়া করত। আমি এ রকম ৭-৮ জনকে চিনি। এখন ঘটনাটি অন্যায়ভাবে আমার ওপর চাপানো হয়েছে। আমিতো পড়াশোনা করছি, আমাকে এসব থেকে বাঁচানো হোক।