ফেনীতে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা, আটক ২

Slider গ্রাম বাংলা

66888_Feni-Ma-&-May

 

ফেনী প্রতিনিধি; ফেনীর ফুলগাজীতে মা ও শিশু মেয়েকে নৃশংস ভাবে হত্যার পর রক্তাক্ত লাশ তোষকের নিচে চাপা দিয়ে পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার মধ্যরাতে পুলিশ মা বিবি ফাতেমা সাথী (২৫) ও মেয়ে শান্তিকা ইসলাম ইসমা’র (৪) লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রাতেই দুই জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার। নিহত সাথী সাথীর ফুলগাজী উপজেলার জিএমহাট ইউনিয়নের পূর্ব বশিকপুর গ্রামের বহর আলী ভূইয়া বাড়ির মনির আহম্মদ ভূইয়ার ছোট মেয়ে ।
নিহত সাথীর মা হোসনে আরা বেগম জানান, ৭ বছর আগে সাথীর মোবাইল ফোনে মিস কলের সূত্র ধরে সদর উপজেলার কাজিরবাগ ইউনিয়নের রাণীর হাট ভূঞা বাড়ির আব্দুল লতিফ ওরফে রঙ্গিন কোম্পানীর ছেলে শাহাদাত হোসেন রিমনের (৩৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। পরবর্তীতে অবাধ মেলামেশার কারণে স্থানীয়দের চাপে তারা বিয়েতে বাধ্য হয়। বিয়ের পর থেকে রিমনের আসল রুপ ধরা পড়তে শুরু করে। স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে রিমন জড়িত থাকায়  তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ডজন খানেক মামলা দায়ের হয়। এসব বিষয় জানাজানি হলে সাথীর সাথে রিমনের পারবারিক বিরোধ দেখা দেয়। এতে সাথী বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করে।
তিনি আরও জানান, মেয়েদের পটিয়ে বিয়ে করা, অপহরণ, নির্যাতন, মাদক ব্যবসার সাথে তার বোন জামাই রিপন যুক্ত ছিলো। চার বছর আগে রিমন ও সাথীর ঘরে শিশু সন্তান শান্তিকা ইসলাম ইসমার জন্ম নেয়। গত এক বছর পূর্বে সাথী তার স্বামী রিমনের বাড়ি ফিরে গেলে শুরু হয় নির্যাতন। এক পর্যায়ে গত চার মাস পূর্বে রিমনের সাথে সাথীর বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এর কিছুদিন পর রিমন অপহরণ মামলায় জেলে হাজতে চলে যায়। জেলে যাওয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে সাথী ও তার বাবার পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে রিমন ও তার বন্ধুরা।
নিহতের মেঝ বোন বিবি আয়েশা কলি জানায়, বুধবার সকালে তার মা বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য ফেনীতে তার বাসায় যায়। এসময় ছোট বোন সাথী ও তার মেয়ে ইসমা বাড়িতে একা ছিলো। সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন তাদের কোন সাড়া শব্দ না পেলে তার ভাগিনা ঘরে প্রবেশ করে। এসময় ঘরের একটি কক্ষে সাথী ও তার মেয়ে ইসমার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগে কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘরের মধ্যে তাদের দু’জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ও শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ তোষকে মুড়িয়ে পালিয়ে যায়।
ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আলিম জানান, পরিবারের স্বজনের সাথে আলাপ করে প্রথমে জোড়া এ হত্যার সাথে সাথীর সাবেক স্বামী রিমনে জড়ানো হলেও মধ্যরাতে কারাকর্তৃপক্ষের সাথে পুলিশ যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয় রিমন কারাগারে বন্দি রয়েছে। খবর পেয়ে মধ্যরাতে ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায়, পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এম মোর্শেদ জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *