ঢাকা ; রমজানে চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, সারা বছর সুবিধা করতে না পেরে রমজান মাসে বেশি আয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা একটু এদিক-ওদিক (মূল্য কারসাজি) করে। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাইয়ের রাষ্ট্রদূত হাজাহ মাসুরাই বিনতে হাজী মাসরির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আপনি পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশ ভ্রমণ করেছেন, রোজার সময় অন্য দেশগুলোতে যেখানে পণ্যের দাম কমে সেখানে আমাদের ব্যবসায়ীরা এ মাসটিকে মুনাফা অর্জনের মাস হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু কেনো- এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সিঙ্গাপুরের মসজিদের ইফতার করেছি। সেখানে দাম বাড়েও না কমেও না স্ট্যাবল। আমি আগেও বলেছি, আমার ভুল হতে পারে শুদ্ধ হতে পারে। সঠিক কথা হতে পারে। আমি মনে করি সারা বছর সুবিধা করতে পারে না। রোজার মাসে কিছু আয় করার জন্য কিছুটা এদিক-ওদিক হয়, এটা আমার উপলব্ধি। এই উপলব্ধিটা আমার থাকে না যখন দেখি…একটা মালের দাম বাড়তে পারে যখন ঘটতি থাকে। ঘাটতি তো নেই। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘এই পণ্যটা এনে যদি আমি বিক্রি না করতে পারি। তাহলে এটা যাবে কোথায়? সে জন্য কয়েক দিন, রোজার প্রথম দিকে…। ‘ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কোনো দেশে রোজার মাসের পণ্য দিয়ে লেখালেখি হয় না। আমরা যদি লেখালেখিটা বাদ দিলাম জিনিসপত্রের দাম একেবারে কমে যেত। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘আমি পার্লামেন্টে বক্তৃতা করে ছিলাম, আমরা যখন সরকারি দলে। আমি তখন বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ছিলাম। বিএনপি যখন বাজারে যা দাম না তার থেকে বাড়িয়ে বক্তৃতা (পার্লামেন্টে) করছিল আমি বললাম আজকেই দাম বাড়বে। কারণ এটাই দোকানদার শুনবে। পার্লামেন্টের মেম্বার যখন বলছে অমুক পণ্যের দাম আড়াই শ টাকা আমরা কম বিক্রি করে লাভ কি! সে জন্য আমাদের লেখালেখিটা যদি কম হয় তাহলে খুব ভালো হতো। ‘
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করব তারা রোজার মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে চলেন। ভোক্তারা যাতে খুশি হয় সেভাবেই তারা পণ্যের বেচা-কেনা করবেন সেটা আমার প্রত্যাশা। ‘
কিছুদিন আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভায় আপনি বলেছিলেন নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও মজুদ স্বাভাবিক আছে। রমজানে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। ইতিমধ্যে চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে
জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা জিনিস আমার চিন্তায় আসে না। জিনিসপত্রের দাম বাড়াবাড়ি হয়, যদি পণ্যর ঘাটতি থাকে। যেখানে চিনি চাহিদার থেকে বেশি সরবরাহ, ছোলা ও ডালও চাহিদার চেয়েও বেশি সরবরাহ। পেয়াজ, রসুন, খেজুরের সরবরাহও চাহিদার চেয়ে বেশি। চিনির দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম এখন কম। টিসিবির চেয়ারম্যানকে আরও চিনি কেনার জন্য বলেছি। তবে টিসিবি তো দেশের ১৬ কোটি মানুষকে সাপ্লাই দিতে পারবে না। ‘
চাহিদাপত্র নিয়েও অনেকে মিল থেকে চিনি সরবরাহ পাচ্ছেন না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছেও একজন এসেছিল। আমি সিটি গ্রুপের সঙ্গে কথা বলেছি। এমন লোকও আছে তুমি একটা ডিও নিয়ে আমার কাছে বিক্রি করলা, অন্য একজনও ডিও নিয়ে আমার কাছে বিক্রি করল। এতে আমার কাছে অনেকগুলো ডিও মজুদ হয়েছে। একসাথে সে যদি ওগুলো চায় তবে তো দিতে পারবে না। ‘
তিনি বলেন, ‘তবে মেজর দুটি কম্পানি একটা মেঘনা ও অপরটি সিটি গ্রুপ। আমি তাদেরকে ডাকতেছি। ডেকে ডিও’র ব্যাপারটায় কি প্রবলেম সেটা আমি দেখব। ‘ একই সঙ্গে খুচরা বাজার তদারকি করা সম্ভব নয় বলেও জানান তোফায়েল আহমেদ।