প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শান্তি, সাম্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। জাতির পিতা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন দর্শন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
আগামীকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও ক্যুরি শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৪তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
বিশ্বের মুক্তিকামী, নিপীড়িত, মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত এ নেতা জনগণের জন্য জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর অতুলনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা, রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ, ঐন্দ্রজালিক ব্যক্তিত্বই বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, তাঁর নির্দেশেই বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়।
বঙ্গবন্ধু ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরতা নয়’ এবং ‘সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান’কে পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগও সরকার গঠন করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সব সময়ই জাতির পিতার এ নীতি ও আদর্শকে অনুসরণ করছে।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার শান্তির জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকে করণীয় হিসেবে গ্রহণ করেছে। যা প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতি উত্তরণে বঙ্গবন্ধুর শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বশান্তি পরিষদের শান্তি পদক কমিটি জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতিপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ১৯৭৩ সনের ২৩ মে ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করেন। এটি ছিল বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের জন্যও প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও ক্যুরি শান্তি পদক’ প্রাপ্তির ৪৪ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে ‘জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু শান্তি সংসদ’ ‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ প্রদান করছে জেনে তিনি আনন্দিত। আর এ আয়োজনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান।
সেই সাথে তিনি ‘জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু শান্তি সংসদ’ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও ক্যুরি শান্তি পদক’ প্রাপ্তির ৪৪ বছর পূর্তি উদ্যাপন এবং ‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন।
বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও ক্যুরি শান্তি পদক’ অর্জনের জাতীয় ইতিহাসকে সংরক্ষণ ও গণমানুষের কাছে তুলে ধরতে ‘জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু শান্তি সংসদ’এর উদ্যোগ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।