রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এ নীতি ও আদর্শকে অনুসরণ করছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও ক্যুরি শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৪তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন । আগামীকাল ২৩ মে এ দিবস উদযাপিত হবে।
‘জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু সংসদ’ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও ক্যুরি শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৪তম বার্ষিকী উদ্যাপন করছে বলে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের মুক্তিকামী, নিপীড়িত, মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন। তাঁর অতুলনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা, রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ, ঐন্দ্রজালিক ব্যক্তিত্ব বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করে। তাঁর নির্দেশে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় হয়।
হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসানে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। বিশ্বশান্তি পরিষদের কমিটি জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে তাঁকে ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদকে ভূষিত করে। এটি ছিল বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান। জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু সংসদের এই মহতী উদ্যোগ বঙ্গবন্ধুর জুলিও ক্যুরি শান্তিপদক অর্জনের জাতীয় ইতিহাসকে সংরক্ষণ ও গণমানুষের কাছে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আবদুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এবং ‘সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান’ কে পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তিতে এ নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষতামুক্ত এবং শান্তি ও সমৃদ্ধপূর্ণ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হবে।