আনুষ্ঠানিকতা সারতে দরকার ছিল একটি ড্রয়ের। কিন্তু রবিবার রাতে মালাগাকে হারিয়েই শিরোপা উৎসব সেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষা ঘুঁচিয়ে লা লিগার রাজার খেতাব ঘরে তুলেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও করিম বেনজেমার গোলে মালাগাকে তাদেরই মাঠে ২-০তে হারিয়েছে রিয়াল। যেটি ক্লাবের ইতিহাসে তাদের রেকর্ড ৩৩তম স্প্যানিশ লিগ শিরোপা এনে দেয়। ১৯২৯ সালে প্রথমার লিগ সেরা হয়েছিল লস ব্লাঙ্কোসরা।
সাবেক কোচ হোসে মরিনহোর অধীনে ২০১২ সালে সর্বশেষ লা লিগা জিতেছিল লস ব্লাঙ্কোসরা। পরে গত পাঁচবছরে দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছে রিয়াল, কোপা ডেল রেও জিতেছে। শুধু লিগ শিরোপার হাহাকার ছিল। গত মৌসুমে দায়িত্ব নিয়ে রিয়ালকে ইউরোপ সেরা করেছিলেন জিদান। এবার উপহার দিলেন লা লিগাও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল জিতে ডাবলস জয়ের সুযোগ এখন বার্নাব্যুর দলটির সামনে।
মালাগার মাঠ স্টাডিও লা রোসালেদায় শিরোপা ঘরে তুলতে গোলশূন্য ড্রই যখন চলত, তখন শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিল রিয়াল। দর্শকরা নড়েচড়ে বসতে না বসতেই মালাগার জালে বল ঢুকিয়েছেন রোনালদো।
দ্বিতীয় মিনিটে অতিথিদের সেই গোলের উৎস স্বাগতিকদের এককালের ঘরের ছেলে ইসকো। প্রতিপক্ষের ভুলে মাঝমাঠে বল পেয়ে ইসকো দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে রোনালদোর দিকে ঠেলে দেন। তা থেকে মালাগার জাল খুঁজে নিতে সমস্যা হয়নি সিআর সেভেনের।
রোনালদোর এই গোলে ইতিহাসে লেখা থাকবে আরেকটি কারণে, নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগের এক আসরের সবগুলো ম্যাচে প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নেওয়ার কীর্তি গড়েছে গোলটি। রিয়াল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৬৪ ম্যাচে গোল করার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে।
পরে ১৪ মিনিটে মালাগাও সুযোগ পেয়েছিল সমতায় ফেরার। সান্দ্রো রামিরেজের শট কেইলর নাভাস ঠেকিয়ে দেওয়ার পর কেকোর হেডও লক্ষ্যে থাকেনি।
সেখান থেকে স্বাগতিক গোলরক্ষক কার্লোস কামেনি দুমিনিটের ব্যবধানে দুবার গোল বঞ্চিত করেছেন অতিথিদের। প্রথমে ৩৪ মিনিটে রোনালদোর দারুণ একটি আক্রমণ প্রতিহত করেন তিনি, পরে ৩৬ মিনিটে বেনজেমাকেও করেছেন হতাশ।
ম্যাচের ৪১ মিনিটে অল্পের জন্য সমতায় ফিরতে পারেনি স্বাগতিকরাও। রিক্কার ক্রস কেকোর মাথা ছুঁয়ে অল্পের জন্য নিশানা খুঁজে পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫৫ মিনিটে রিয়ালের দ্বিতীয় গোলটি এসেছে করিম বেনজামার থেকে। টনি ক্রুসের কর্নার থেকে গোল মুখে জোরালো শট নিয়েছিলেন রিয়াল কাপ্তান সার্জিও রামোস। স্বাগতিক গোলরক্ষক কামেনি তা ফিরিয়ে দিলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বলে পা লাগিয়ে দলকে শিরোপা আনন্দে ভাসিয়েছেন বেনজেমা। যদিও টিভি রিপ্লেতে বলছে অফসাইডেই ছিলেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।
দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও মালাগা চেষ্টা করে গেছে ম্যাচে ফেরার। কিন্তু বারবার নাভাস দেয়ালের কাছে আটকে যেতে হয়েছে স্বাগতিকদের। ৫৮ মিনিটে কামাচোর মাথা ছোঁয়া বল দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দিয়েছেন এই কোস্টারিকান গোলরক্ষক।
এই জয়ে ৩৮ ম্যাচে ৯৩ পয়েন্ট নিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার থেকে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে লিগ শেষ করল রিয়াল। নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় পেয়েছে বার্সাও। এইবারের বিপক্ষে দুবার পিছিয়ে পড়েও লিওনেল মেসির জোড়ায় ৪-২ গোলে সান্ত্বনার জয় পেয়েছে কাতালানরা।