এই না হলে ফাইনাল ম্যাচ! শ্বাসরুদ্ধকর শেষ ওভার। চাই ১১ রান। উইকেটে আছেন পুনে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ এবং মনোজ তিওয়ারি। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার গতিদানব মিচেল জনসন। প্রথম বলে চার মেরে মনোজ তিওয়ারি জয়ের ইঙ্গিত দিলেন। কিন্তু তার পরেই বদলে গেল দৃশ্যপট! দ্বিতীয় বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন তিওয়ারি। উইকেটে আসলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ৩ নম্বর বলে স্বদেশী স্মিথকে ফেরত পাঠালেন জনসন। পঞ্চম বলে ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানের ক্যাচ ছেড়ে হতাশায় মুষড়ে পড়লেন হার্দিক পান্ডিয়া। দরকার ১ বলে চার রান। পঞ্চম বল ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়েই দৌড় শুরু করলেন ক্রিশ্চিয়ান। কিন্তু ২ রানের বেশি নিতে পারলেন না। রানআউট হয়ে গেলেন! ১ রানের জয়ে সাথে সাথে উল্লাসে ফেটে পড়ল মুম্বাই! এই না হলে ফাইনাল!
এমনিতেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তারকাবহুল দল। আইপিএলের চলতি দশম আসরের হট ফেবারিট। কিন্তু রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টের মুখোমুখি হলেই তাদের কী যেন হয়ে যেত! ফাইনালের আগে চলতি আসরে ৩ বারের সাক্ষাতে ৩ বারই হেরেছে রোহিত শর্মার দল। আজও গ্র্যান্ড ফাইনালে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছিল! শেষ পর্যন্ত পান্ডিয়া ভাতৃদ্বয়ের একজনের দৃঢ়তায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৯ রান তুলেছে তারা।
দলীয় ৭ রানেই প্রথম উইকেট হারায় রোহিত শর্মার দল। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান পার্থিব প্যাটেল ৪ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। জয়দেব উনারাকট কট অ্যান্ড বোল্ড করে দেন পার্থিবকে। ১ রানের ব্যবধানে আবারও আঘাত হানেন জয়দেব। এবার তার শিকার অপর ওপেনার সিমন্স। ৩ রান করে তিনি শার্দুল ঠাকুরের তালুবন্দী হন। তৃতীয় উইকটে আম্বাতি নাইডু আর অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৩৩ রানের জুটি গড়েও ধস সামলাতে পারেননি।
আম্বাতি নাইডু ১২ রানে রানআউটের শিকার হলে ভাঙে এই জুটি। রোহিত শর্মাও ফিরে যান ৬ রান করে। শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। ৭৯ রানের মাঝে ৭ উইকেট হারিয়ে একশর নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগে। এই মিছিলের মাঝেই টিকে থাকার দৃঢ়তা দেখান ক্রুনাল পান্ডিয়া। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩ চার এবং ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন তিনি। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চার ব্যাটসম্যন দুই অংকেই পৌঁছতে পারেননি।
কিন্তু এই ১৩০ রানের অতি সাধারণ টার্গেটে পৌঁছতে ব্যর্থ হলো রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্ট। ধোনি করলেন ১৩ বলে ১০ রান। ৫০ বলে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এছাড়া ওপেনার আজিঙ্কা রাহানে ৩৮ বলে ৫ বাউন্ডারিতে করেছেন ৪৪ রান। মুম্বাইয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন মিচেল জনসন। ২টি উইকেট গেছে জসপ্রিত বুমরাহর দখলে।