রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের রাজনগরে শাম্মী আখতার (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে টয়লেটে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি সে।
গতকাল সকালে বাড়ির অদূরে জঙ্গলে তার লাশ পাওয়া যায়। রাজনগর থানা পুলিশ গতকাল লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এদিকে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল ও এএসপি (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর টেংরা ইউনিয়নের কাছাড়ী করিমপুর গ্রামের হারুন মিয়ার মেয়ে শাম্মি আখতার (১৮) তারাপাশা স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাশের বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন চার্জ দিয়ে নিয়ে আসে। খাওয়া শেষে রাত সোয়া ৮টার দিকে পড়ার টেবিলে বসে। এ সময় হঠাৎ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে টয়লেটে যায়। দীর্ঘক্ষণ পরও ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে বের হন পিতা হারুন মিয়া ও ভাই শাকিব আহমদসহ কয়েকজন। বাড়ির আশপাশে ও বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে আসেন।
এদিকে গতকাল সকালে হারুন মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশের জমিতে লোকমান মিয়া মহিষ চরাতে যান। এ সময় একটি মহিষ পাশের মছকন মিয়ার আকাশিয়াম গাছের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তিনি ওই মহিষ আনতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। ছুটে আসেন শাম্মি আখতারের মা নাসিমাও। তিনি তার মেয়ের লাশ দেখতে পেয়ে জঙ্গল থেকে বের করে পাশের জমিতে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে রাজনগর থানা পুলিশ বিকাল ২টায় ঘটনাস্থলে যায়। পরে মৌলভীবাজার থেকে পিবিআই ও সিআইডির লোকজন আসেন। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল ও সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। পিবিআই ও সিআইডি লাশের আশপাশ হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে রেখেছে। লাশের মুখে বেশ কিছু নখের দাগ ও ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করছি। আশা করি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, ঘটনাস্থল ও বিভিন্ন আলামত দেখে মনে হচ্ছে তাকে গ্যাংরেপ করার পর হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ ঘটনাস্থলে তদন্ত করছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। আশা করা যায় খুব দ্রুত এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা যাবে।