ঢাকা; বনানী ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি আবদুল হালিম ওরফে নাঈম আশরাফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকা থেকে ইমেকার্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের স্বত্বাধিকারী নাঈম আশরাফকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৬ মে বনানী থানায় দায়ের হওয়া মামলার অন্যতম এই আসামি ১১ দিন পলাতক ছিলেন। এ নিয়ে মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার করা হলো।
ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের একটি বিশেষ দল ও ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল নাঈম আশরাফকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে গত সোমবার এ মামলার আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান থেকে শাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমত আলী ও পুরান ঢাকা এলাকা থেকে শাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৮ মার্চ দ্য রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ায় ৬ মে বনানী থানায় মামলা হয়। ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রী শাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, গাড়িচালক বিল্লাল ও অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামি করে মামলা করেন।
পরে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর শাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তাঁরা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং তাঁকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম তাঁদের মারধর করেন। তাঁরা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানানোর পর শাফাত তাঁর দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। লোকলজ্জার ভয়ে মানসিকভাবে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাঁদের কথামতো না চললে বা এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি। তাঁকে ও তাঁর বন্ধু রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।