ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা: সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, ‘প্রথম আলোর মিজানুর রহমান খান বলেন প্রধানমন্ত্রী নাকি সরকার।কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, প্রশাসনের যুগ্ম সচিব কিংবা জমির সার্ভেয়ার হলো সরকার।আসলে এ দেশে কে সরকার সেটাই বুঝতে পারি না।’
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুল হক এ মন্তব্য করেন।
খায়রুল হক বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি থাকতে অনেক কথা বলতে পারিনি।অনেক কথা কেন, কথাই বলতে পারিনি।আজ আমি অনেক কথা বলব।দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা ৩৫০ জন সংসদ সদস্য সার্বভৌম নন।সার্বভৌম হলো জনগণ।আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, জনগণ সেটা মানতে বাধ্য—দয়া করে এমন মনোবৃত্তি পোষণ করবেন না।’ সরকারি কর্মকর্তাদেরও এমন ধারণা ত্যাগ করার আহ্বান জানান তিনি।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, আমাদের দেশে যত আইন আছে ইংল্যান্ডেও এত আইন নেই।কিন্তু আইন থাকলেও আমরা সেগুলো মেনে চলি না।আর ইংল্যান্ডের লোকজন সেগুলো মেনে চলে।’
আমাদের দেশের আইনগুলোর মাত্র ১০ শতাংশ জনগণ মেনে চলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এত আইন।কিন্তু ৯০ ভাগই কেউ মানে না।তা হলে কি ৯০ ভাগ অপরাধ হয় না? হয়।তাই আইনগুলো যেন মানুষ মেনে চলে, সে জন্য এগুলো উন্নত করে প্রয়োগ করতে হবে।’
খায়রুল হক পরামর্শ দেন, গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ আহরণে বঙ্গোপসাগরে বিস্তারিত জরিপ করতে হবে।সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারে প্রয়োজনে বিদেশি অংশীদারত্ব দেওয়া যেতে পারে।তিনি মনে করেন, পরিবেশ রক্ষায় জনগণকে সচেতন হতে হবে।ঢাকাকে ঘিরে যে নদী আছে, সেগুলো না বাঁচলে ঢাকা শহর প্রাচীন সোনারগাঁ কিংবা উয়ারি-বটেশ্বরের মতো বিলীন হয়ে যাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্রবিষয়ক ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমাদের সমুদ্রের সম্পদ আহরণে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা।সমুদ্রে কী ধরনের কিংবা কত মাছ আছে, সেটা জানতে জরিপের প্রয়োজন।’ তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা মীমাংসা নিয়ে যত সমালোচনা হয়েছে—এর মধ্যে খুব কমই হয়েছে আইনভিত্তিক।ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এম শাহ আলম বলেন, ‘সমুদ্রের সম্পদ রক্ষায় দরকার মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয় এবং মেরিটাইম কমিশন।যেন এটা নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা যায়।’
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পরিচালক (অপারেশনস) এস এম হাকিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক মারুফ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।