অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
নিজের বাল্যবিয়ের রুখে দেয়া বরিশালের আগৈলঝাড়ার বারপাইকা গ্রামের সেই নীলিমা কর নিশি এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এ-গ্রেড পেয়েছে। নারী নির্যাতন বন্ধসহ দেশ সেবার জন্য ভবিষ্যতে একজন বিচারক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সেই নীলিমা যে পরিবারের পরিবারের বিরুদ্ধে লড়ে নিজের বাল্যবিয়ে রুখে দিয়ে উপজেলাসহ সমগ্র দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আগৈলঝাড়ার রতœপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের নিপুল করের মেয়ে নীলিমাকে তার দুই কাকা জোর করে বাল্যবিয়ে দিতে চাইলে সে রাজি না হওয়ায় তাকে সহ তার মা ও বোনকে মাথা ফাটিয়ে দেয় কাকা বিপুল কর ও রনি কর। দীর্ঘদিন ধরে তাদের থাকতে হচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। ওই ঘটনায় নীলিমার বাবা নিপুল কর, কাকা রনি কর ও বাল্যবিয়ে দেয়ার জন্য ঠিক করা পাত্র ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক অমল সরকারকে ভ্রাম্যমান আদালত বিভিন্ন মেয়াদের জরিমানা ও কারাদ- প্রদান করে। তবে নীলিমাকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগ অজ্ঞাতকারণে আজও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম।
নীলিমা কর নিশি জানায়, পরিবারে বাবা-মা, পাঁচ বোন ও এক ভাই নিয়ে তাদের সংসার। আর্থিক অনটন তাদের নিত্যসঙ্গী। ভাই-বোনদের মধ্যে সে সবার বড়। এসএসসি পরীক্ষার সময় তার কাকা বিপুল কর ও রনি কর তাকে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার ফলে পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটায় পরীক্ষায় কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে পারেনি সে।
নীলিমা আরও জানায়, গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এ-গ্রেড পেয়েছি। আমার বাবা নিপুল কর একজন দিনমজুর, মা অনিতা কর গৃহিনী। বাবার একার আয়ে বহু কষ্টে ভাই-বোনদের লেখাপড়া ও পরিবার চলে। বড় সন্তান হিসেবে লেখাপড়ার পাশাপাশি নৃত্য ও কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে পাওয়া অর্থে নিজের ও ভাই-বোনদের লেখাপড়া করার খরচ যোগাতে হয়। আমি ভবিষ্যতে একজন বিচারক হয়ে নির্যাতিতা নারীদের পাশে দাঁড়ানোসহ দেশের সেবা করতে চাই।