টালিউড থেকে এদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন সিনেমায় অভিনয় করতে। সিংহভাগ কাজও হয়ে গেছে। কিন্তু এর মধ্যেই বিপদ! কারণ সিনেমার পরিচালক তো নায়িকার প্রেমে দিওয়ানা হয়ে গেছেন। একপর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাবও যায় নায়িকার কাছে। যেতেই পারে। এটা কোনো বড় অন্যায় নয়। কিন্তু নায়িকা ‘না’ বলে দেওয়ার পর পরিচালক যেন উঠেপড়ে লাগেন। নায়িকার জীবন অতিষ্ঠ করে তোলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিকার চাইলেন কলকাতার নায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার! আর যার বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগ, সেই বাংলাদেশি পরিচালকের নাম রফিক শিকদার।
দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টটিতে পরিচালকের সঙ্গে তার কথপোকথনের কিছু স্ক্রিনশট যুক্ত করেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি লিখেছেন, “আজ আমি আমার সকলের সাথে একটা ব্যাপার শেয়ার করতে চাই সেটা হচ্ছে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমি ঢাকা গিয়েছিলাম আমার প্রথম বাংলাদেশী ছবি ‘হৃদয় জুড়ে’র শুটিং করতে এবং সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশে আমার প্রযোজনা টিম, সহশিল্পী সহ সকলের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এত কিছুর পরেও অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এই ছবির পরিচালক রফিক শিকদার চূড়ান্ত অপেশাদার একজন মানুষ। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারি শ্যুটিং এগোচ্ছে ধীর গতিতে। বাংলাদেশের শিডিউল শেষ হলেও আমার সিনগুলো শেষ করতে পারেননি পরিচালক উনারই পেশাদারিত্বের অভাবে। অকারণেই উনি শুটিংয়ের সময় আমার সাথে কাজের বাইরে অন্যান্য বিষয় নিয়ে গল্প করতে চাইতেন। সময়ে-অসময়ে মেসেজ করতেন নানা রকম। যেগুলো কাজ সংক্রান্ত নয়! মানে বাড়তি অ্যাটেনশন পাওয়ার চেষ্টা। ”
“অনেক সময়ই আমি এর প্রতিবাদও করেছি কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সংশোধন করেননি। এরপর প্রযোজনা টিমের চুক্তি অনুযায়ী আমার সুটিং সিডিউল শেষ হবার পরই আমি কলকাতা ফিরে আসি। তবুও আমি রাজী ছিলাম চুক্তি শেষ হবার পরেও বাংলাদেশে গিয়ে ছবির বাকী অংশের কাজ শেষ করতে। যাই হোক, কলকাতা ফেরার পরই উনি শুরু করেন আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়, উনি আমাকে বার বার মেসেজ করতেন। বলতেন, উনি নাকি আমাকে মিস করছেন! একটা সময়ের পর আমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন! বারবার ব্লক করা সত্ত্বেও উনি থামেননি। উনি সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন আমাকে। ”
তিনি আরও লিখেছেন, “এসব সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ শিল্পী হিসেবে আমরা নূন্যতম সম্মানটুকু অন্তত আশা করি সবার কাছে। আমি প্রমাণ স্বরূপ উনার করা হোয়াট্সঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মেসেজের স্ক্রিনশটও শেয়ার করছি তাহলেই আপনারা এই মানুষটির মানসিকতা বুঝতে পারবেন। এই লোকের কী বিচার হওয়া দরকার সেটা আমি আমার বাংলাদেশের বন্ধুদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি। আমার সত্যি এ সমস্ত এভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম এই ধরনের হয়রানির একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার। কারণ এই ধরনের নিম্ন মানসিকতার লোকজন দুই বাংলার চলচ্চিত্র জগতের জন্যই হানিকারক। এরা শিল্প এবং শিল্পী কাউকেই সম্মান করতে জানেনা। এবং দুই বাংলার শিল্পীদেরই আমার অনুরোধ এই রকম ঘটনার সম্মুখীন হলে প্রতিবাদ করুন ও সতর্ক হোন। নইলে চুপ করে থাকলে এরা আরও পেয়ে বসবে। আর একজন শিল্পী হয়ে আমি এটুকুই বলতে পারি ঈশ্বর উনার শুভবুদ্ধি জাগ্রত করুন। ”