সাগর ঘেঁষে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন করে পর্যটন শহর কক্সবাজারকে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার ইনানী সৈকতে এক অনুষ্ঠানে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের পর সৈকতে কিছু সময় হাঁটাহাঁটিও করেন সরকার প্রধান। সাগরের পানিতেও নামেন তিনি।
মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত সুন্দর সমুদ্র সৈকত, কিন্তু কক্সবাজার সবসময় অবহেলিত ছিল। এটাকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করছি। ’
কক্সবাজারকে পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তোলা হলে এখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সমুদ্র সম্পদকে অর্থনৈতিক কাজে লাগানোর উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ জন্য যা যা করার দরকার, তা আমরা করব। ’
বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রথম বেড়াতে আসার স্মৃতি তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে কক্সবাজারের উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপের কথাও বলেন তিনি।
পযটক আকর্ষণের জন্য নির্মিত ৮০ কিলোমিটার এ সড়কের একপাশে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, অন্যপাশে পাহাড়ের সারি।
হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে তিন ধাপে এই নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই নির্মাণ কাজ পরিচালনা করে।
নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ হওয়ায় সেনাবাহিনী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এই নির্মাণ কাজের সময় ভূমি ধসে ছয় সেনা সদস্যের মৃত্যুর কথাও স্মরণ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চার লেইনে উন্নীত করার আশ্বাসও দেন প্রধানমন্ত্রী।
ইনানী সৈকতের এই অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, সড়ক বিভাগের সচিব এম এন সিদ্দিক বক্তব্য রাখেন।
সকালে বিমানের বোয়িং উড়োজাহাজ মেঘদূত-এ কক্সবাজার নামার পর ইনানী সৈকতে যান প্রধানমন্ত্রী। তার এই যাত্রার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে সুপরিসর বিমান চলাচল শুরু হল।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুপরিসর বড় বিমানের প্রতি সপ্তাহে একটা করে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। ’
কক্সবাজারের সম্প্রসারিত রানওয়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিমান বাহিনীসহ সবাই এর সুবিধা পাবে।
কক্সবাজারের সম্প্রসারিত রানওয়ে ব্যবহার করে নামার পর বিমানবন্দরে বড় আকারের উজোজাহাজ চলাচল উদ্বোধনের পর মোনাজাত করেন প্রধানমন্ত্রী। বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকারের নির্মাণ করা এ বিমানবন্দরটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এতদিন কেবল ড্যাস কিউ ৪০০ মডেলের ৭৪ আসনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে এবং এর চেয়ে ছোট যাত্রীবাহী ও কার্গো উড়োজাহাজই এ বিমানবন্দরে ওঠানামা করত।
কিন্তু কক্সবাজারকে একটি আধুনিক পর্যটন নগরী এবং মহেশখালীকে বিনিয়োগের ‘হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরুর প্রেক্ষাপটে সরকার এ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করার কাজ শুরু করেছে।