স্টাফ রিপোর্টার ; নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে এক তরুণী তিন দিন ধরে অনশন করছেন। উপজেলার খাঁজুর ইউনিয়নের জয়পুর সরদার পাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের বাড়িতে মাহফুজা মিলি (২২) নামে ওই তরুণী এই অনশন করছে। মাহফুজা মিলি রাজশাহী জেলার পুটিয়া উপজেলার ছাতার পাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিনের মেয়ে।
স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামী রিপন সরদারের বাড়িতে অবস্থান নেয়ায় স্বামীর আত্মীয়-স্বজন তাকে শারীরিক নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল থেকে প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ওই তরুণী। ঘটনার পর থেকে রিপন বাড়ি থেকে পলাতক।
দুই বছর আগে রিপন সরদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রথমে বন্ধুত্ব হয়। এ সম্পর্ক থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত তিন মাস আগে পরিবারের অসম্মতিতে আব্দুল হামিদের ছেলে রিপন সরদারকে বিয়ে করে। এরপর নওগাঁ শহরের একটি ভাড়া বাসায় কিছুদিন বসবাস করে মিলি তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। মিলি বর্তমানে নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের বাংলা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রিপন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের শিক্ষক।
গত এক মাস আগে মিলি তার স্বামী রিপনের গ্রামের বাড়িতে গেলে স্বামীর পরিবারের লোকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে আবারও রিপনের গ্রামের বাড়িতে গেলে ছোট বোন সীমা, চাচা বারিক ও তার স্ত্রী শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। গত তিন দিন থেকে মিলিকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও জানা যায়। অবশেষে মিলি প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
মাহফুজা মিলি বলেন, বিয়ের পর ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এতো টাকা দেয়ার মতো সামর্থ্য আমার পরিবারের নেই। এছাড়া সংসার করবে না এবং আমার প্রতি তার কোনো আগ্রহ নেই বলেও জানানো হয়। তার সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এখন অন্য জায়গায় তার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে বলেও শুনছি। আমি আমার অধিকার ফিরে পেতে চাই।
মহাদেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ছেলের বাবা আব্দুল হামিদ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বলেছেন, অপরিচিত এক মেয়ে স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে বিয়ের কাগজপত্র দেখে প্রমাণিত হয় মেয়েটি তার ছেলের স্ত্রী। তবে দুই পক্ষ থেকে আদালতে মামলাও চলমান আছে। মেয়েকে যে নির্যাতন করা হয়েছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।