পুলিশ ও মেয়েটির স্বজনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেয়েটির মা–বাবা পুরান ঢাকায় বাস করেন। পরিবারের অগোচরে কয়েক দিন আগে একটি ছেলেকে বিয়ে করে সে। স্বামীর সঙ্গে থাকাও শুরু করে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মেয়েটি স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। এ সময় তার পূর্বপরিচিত তরুণ শাওন মেয়েটির অসহায়ত্বের সুযোগে জুরাইন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে নিয়ে হাত-মুখ বেঁধে অন্য সহযোগীদেরসহ ধর্ষণ করেন। এতে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘটনার পরদিন মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে কদমতলী থানায় আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। মামলার আসামিরা হলেন শাওন, মুন্না, জলিল, নিরাপত্তাকর্মী স্বপন, মো. মিশাল, মো. মাসুদ, মো. সজীব ও তানজিল ওরফে তাঞ্জু। তাঁরা সবাই জুরাইন এলাকাতেই থাকেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মেয়েটি রিকশায় জুরাইন চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় এলে শাওন তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রিকশা থেকে নামিয়ে জুরাইন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে নিয়ে যান। এরপর নিরাপত্তাকর্মী স্বপন মেয়েটিকে বিদ্যালয়ের দোতলায় নিয়ে একটি কক্ষের ভেতর ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দেন। রাত দেড়টার দিকে শাওন, নিরাপত্তাকর্মী স্বপনসহ আটজন এসে তালা খুলে ভেতরে ঢুকে মেয়েটিকে জবরদস্তি শুরু করলে সে চিৎকার করতে শুরু করে। এ সময় মুন্না নামের একজন তাঁর মুখ চেপে ধরে ও রশি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। ওই কক্ষের ভেতরেই আটজন একে একে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এতে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। সকাল ছয়টার দিকে তাঁরা মেয়েটিকে একটি অটোরিকশায় তুলে দেন। চালক মেয়েটিকে নানা দিকে ঘুরিয়ে জুরাইন ঋষিপাড়ায় এনে নামিয়ে দেন। আহতাবস্থায় মেয়েটি প্রথমে মামার বাড়িতে যায়। পরে স্থানীয় ক্লাব ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে বিচার চায় তারা। সেখানে প্রভাবশালীরা বিষয়টি আপসের চেষ্টাও করেন। পরে তারা কদমতলী থানায় গিয়ে মামলা করে।
কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, এ ঘটনার মূলে শাওন নামের এক তরুণ। তিনি অন্যদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে তাঁকে এখনো ধরা যায়নি। মামলার পরপরই স্কুলটির নিরাপত্তারক্ষী স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরাও শিগগিরই ধরা পড়বে।