স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
নিজের অজান্তেই স্বামীকে সাড়ে তিন মাস আগে তালাক দিয়েছে স্ত্রী। সমিতির ডিপিএসের কাগজে স্বাক্ষরের কথা বলে জালিয়াতি করে নিরক্ষর স্ত্রীকে দিয়ে তালাক নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে স্বামী। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপার পৌর এলাকার হাট-ফাজিলপুর গ্রামে। এ ঘটনায় স্ত্রী শাহানারা বেগম মঙ্গলবার শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে স্ত্রী শাহানারা বেগম উল্লেখ করেছেন, তার শ্বশুর-শ্বাশুরী তার উপর নানা ভাবে অত্যাচার করে আসছিলো। শাহানারা বেগমের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউই নাই। তিনি লেখাপড়া না জানায় তার স্বামী সমিতিতে ডিপিএস করার নাম করে তাকে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। স্ত্রী শাহানারা তিন মাস দশ দিন পর জানতে পারেন সে নাকি তার স্বামীকে তালাক দিয়েছেন। স্বামী পৌর এলাকার ফাজিলপুর গ্রামের মিলন শেখ প্রতারনা করে তাকে দিয়ে তালাক নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। এরপর স্বামী মিলন ছেলে ও মেয়েকে আটকে রেখে মারপিট করে স্ত্রী শাহানারাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়।
পরবর্তীতে গত সোমবার তিনি ছেলে মেয়েকে দেখতে শ্বশুর বাড়ীতে গেলে তার স্বামী আবারো লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় ও ছেলে মেয়েকে আটকে রেখে তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। আহত শাহানারা বেগম বর্তমানে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখন তার যাওয়ার কোন যায়গা না থাকায় ও সন্তানদের কেড়ে নেওয়ায় তিনি অসহায় জীবন যাপন করছেন।
জালিয়াতি করে তালাক নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ায় ও সন্তানদের কেড়ে নিয়ে নিষ্ঠুর আচরণ করায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে সুষ্ঠ বিচার চেয়েছেন তিনি।
অসহায় স্ত্রী শাহানারা বেগম আরো অভিযোগ করেন, তার স্বামী ভন্ড পির সেজে বাবা গনি মাস্তানের নামে কবিরপুর নতুন ব্রীজের পাশে সরকারী খাস জমি দখল করে একটি আস্তানা গড়ে তুলেছেন। কবিরাজী চিকিৎসা নিতে সেখানে প্রতি বৃহস্পতিবার শত শত নারী পুরুষের ঢল নামে। এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ উসমান গনি জানান, তার কাছে মহিলা স্ব-শরিরে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার মাথায় ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেস করা। তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহিলার দেওয়া লিখিত অভিযোগটি শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পাঠানো হয়েছে।