জায়নবাদ ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রেখা টেনে দিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের এক নতুন দলিল। ওই দলিলে সংগঠনটি পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের স্থলে জায়নবাদীদের শত্রু হিসেবে উল্লেখ করছে। সেখানে জায়নবাদী কারা, তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সোমবার দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে হামাস নেতা খালেদ মেশাল আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দলিলটি প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, ইসরায়েলকে তারা স্বীকৃতি দেবে না। তবে ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে রাজি রয়েছে। ওই দলিলে আরও বলা হয়, হামাস কোনও ধর্মীয় সংগঠন নয়।
হামাসের ওই রাজনৈতিক দলিলে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের লড়াই ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয়। যে জায়নবাদী ইসরায়েলি নাগরিকরা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধেই লড়াই করছি আমরা। ’
১৯৮৮ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডের সহযোগী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশের সময় হামাসের প্রাথমিক ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছিল, ‘ইসরায়েলকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করাটাই সংগঠনের মূল লক্ষ্য। ’ সেই সঙ্গে ইসলাম ও ইহুদী ধর্মের বিরোধকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করে এটিকে মতাদর্শ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
নতুন নীতিগত দলিলে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সংগঠনটির বিচ্ছিন্নতাকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘হামাস একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। ’ সেখানে আরও বলা হয়, ‘হামাস কোনও ধর্মীয় সংগঠন নয়, এটি রাজনৈতিক ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিক সংগঠন। ’
ওই সংবাদ সম্মেলনে মেশাল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্নে হামাসের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, ‘নতুন নীতিতে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। তবে আমরা ১৯৬৭ সালের ৪ জুন যে সীমান্ত নির্দেশ করা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে আগ্রহী। যার রাজধানী জেরুজালেম, আর সব শরণার্থীরা তাদের নিজ ঘর ফিরে পাবে। ’
আন্তর্জাতিক সমর্থনের বিষয়ে মেশাল বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতিকে হালকা করতে চাই না, তবে আমরা উদারতা চাই। আশা করছি, নতুন নীতি ঘোষিত হওয়ার পর ইউরোপীয় দেশগুলো আমাদের ব্যাপারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে। ’ হামাস নেতা ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের অনশন ধর্মঘটের প্রতিও সংহতি প্রকাশ করেছেন।
সূত্র: আলজাজিরা