স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহে জঙ্গি আব্দুল্লাহ’র নিহতের খবর টেলিভিশনে শোনার পর তার আগের হিন্দু স্ত্রী কনিকা রানী বিশ্বাস হাতের শাঁখা ভেঙে ও কপালের সিঁদুর মুছে ফেলে বিধবার বেশ ধারণ করেন। তিনি জানান, ৯ বছর আগে স্বামী প্রভাত কুমার বিশ্বাস ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। নাম রাখে আব্দুল্লাহ। এরপরও তিনি দীর্ঘ ৯ বছর কপালে সিঁদুর ও হাতে শাঁখা পড়তেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও পুলিশ অভিযান শুরু করে মঙ্গলবার। বুধবার আত্মঘাতী বিষ্ফোরণে ৪ জঙ্গি নিহত হয়। এদের একজন ঝিনাইদহ থেকে পলাতক নব্য জেএমবি জঙ্গি আব্দুল্লাহ। কনিকা রানী বিশ্বাস জানান, ১৬ বছর আগে প্রভাত কুমারের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের দুইজনের মধ্যে গভীর প্রেম ছিল।
ইসলাম ধর্ম গ্রহনের পর বাড়ি ছেড়ে চলে যায় স্বামী। পরিবারের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তাদের দুটি পুত্র সন্তান আছে। বড় ছেলে আশিক বিশ্বাস (১৪) ৮ম শ্রেণি ও ছোট ছেলে আকাশ বিশ্বাস (৮) ২য় শ্রেনীতে পড়ে। ছেলের মৃত্যু সংবাদ শোনার পর মা সন্ধ্যা বিশ্বাসের চোখের এক ফোঁটা পানি ঝরেনি বলে জানান, ভাই বিপুল কুমার বিশ্বাস। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর স্বাভাবিক জীবন যাপন করে বেঁচে থাকলে তাদের দুঃখ ছিল না জানান, বিপুল কুমার।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের চৈতন্য বিশ্বাসের ৩ ছেলের মধ্যে প্রভাত কুমার বিশ্বাস ছিল ছোট। তাদের ছিল চুন তৈরির ব্যবসা। প্রভাত কুমার বাড়ির পাশের একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ নেয়। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে কনিকা রানীর সাথে দ্বিতীয় বিয়ে করে। সে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল লতিফের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়।
আব্দুল লতিফের মেয়ে রুবিনাকে বিয়ে করে। তাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। নসিমুন চালিয়ে সংসার চালাতো। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক সূত্র জানায় সাড়ে ৩ বছর আগে সে জেএমবিতে যোগ দেয়। তারপর তার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।