শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি; চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর-ত্রিমোহনী-শিবনগর গ্রামে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের একটি আস্তানা সকাল থেকে ঘিরে রাখার পর সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সোয়াট সদস্যদের চূড়ান্ত অভিযান ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ রাতের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
কাল সকালে আবার অভিযান শুরু হবে বলে রাত নয়টায় জানিয়েছেন, সোয়াত টিমের কর্মকর্তা উপ পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। বুধবার বিকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসার পর উপজেলার ত্রিমোহনী-শিবনগর গ্রামে ঘেরা ওই বাড়ির কাছে পৌঁছান সোয়াট সদস্যরা। পরে সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ মিনিটে ওই বাড়ি থেকে টানা গুলির শব্দ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, সোয়াট সদস্যরা অপারেশন শুরু করেছেন। একতলা ওই বাড়ির ভেতরে নারী ও শিশুসহ চারজন আছে বলে আমরা ধারণা করছি। দিনে মাইকের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, সোয়াটের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’। এর আগে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তী ইউনিয়নের ত্রিমহোনী এলাকা ও মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় রাতভর অভিযান চালানো হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে বুধবার ভোর ৫টার দিকে এই আস্তানার সন্ধান পেয়ে বাড়িটিকে ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার ৩টি বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান জানান, ওই বাড়িতে জঙ্গি রফিকুল আলম আবু (৩০), তার স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে বসবাস করছে এমন ধারণা করছেন পুলিশ। আবু শিবগঞ্জ উপজেলারই চাতরা গ্রামের দিনমজুর আফসার আলীর ছেলে। সে চাতরা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো। আবু দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। আবুর আট ও ছয় বছরের দুটি মেয়ে রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য এলাকার ত্রিমোহনী ও শিবনগর গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করেছে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এলাকার নারী পুরুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে ওই বাড়িতে অভিযান চালানোর জন্য ২ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে বাড়ির ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। পুলিশও পাল্টা প্রায় অর্ধশতাধিক গুলি ছোড়ে। নিরাপত্তার কারণে সাংবাদিকদের ওই বাড়ির কাছাকাছি যেতে দেয়া হয়নি। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩ মাস আগে বাড়ির মালিক জেন্টু বিশ্বাস একই এলাকার আফসার আলীর ছেলে আবুকে বাসা ভাড়া দেয়। আবু স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে মসলা বিক্রির ব্যবসা করে। আবু বিয়ের পর প্রায় নয় বছর আগে থেকে আব্বাস বাজারে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতো। তবে এই ব্যবসার পাশাপাশি অন্য কিছুর সাথে জড়িত কিনা সে ব্যাপারে কোন তথ্য জানাতে পারেনি এলাকার মানুষ।