কূটনৈতিক রিপোর্টার; বৃটেনে আচমকা নির্বাচনের ঘোষণায় দেশটির সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তার পূর্ব-নির্ধারিত বাংলাদেশ সফর কাঁটছাঁট করেছেন। চারদিনের সফরে গত সোমবার তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল।
দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসা বৃটেনের গুরুত্বপূর্ণ ওই অতিথিকে বরণে বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। কিন্তু একেবারে শেষ সময়ে এসে লন্ডনের তরফে সফরটি সংক্ষিপ্ত এবং পিছিয়ে দেয়া হয়। পুনঃনির্ধারিত সূচি মতে, ২৪ ঘণ্টার সফরে আজ (বুধবার) বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশে পৌঁছাবেন। বৃটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়নগুলো ডিএফআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত উন্নয়ন কার্যক্রম দেখতে আসছেন তিনি। এটি তার ব্যক্তিগত এবং অনানুষ্ঠানিক সফর হলেও ঢাকায় অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে তার। এছাড়া ঢাকাস্থ ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের একটি গোলটেবিল আলোচনায়ও অংশ নেবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট) প্রশ্নে গত বছর বৃটেনে অনুষ্ঠিত গণভোটের আগে জাপানে জি-৭ আউটরিচ প্রোগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন) ডেভিড ক্যামেরনের সর্বশেষ সাক্ষাৎ-বৈঠক হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য অংশের ব্রেক্সিট বিরোধী অবস্থান বা রিমেইন (ইইউ’র সঙ্গে থেকে যাওয়া)-এর পক্ষাবলম্বনের প্রেক্ষাপটে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়। গত বছরের ঐতিহাসিক ২৩শে জুন বৃটেনে অনুষ্ঠিত ওই গণভোটে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেয়। ওই ভোটে ইইউ’র সঙ্গে থেকে যাওয়ার (রিমেইন) পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন ক্যামেরন। পরে ভোটের ফলাফল তার পক্ষে না আসায় নৈতিক পরাজয় মেনে নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার দলের নেত্রী এবং দীর্ঘ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী তেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরিবর্তিত নেতৃত্বের অধীনেই বৃটেনের ইইউ ত্যাগের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু গত ১৮ই এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক শেষে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অনেকটা নাটকীয়ভাবে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। পরদিন বৃটিশ পার্লামেন্টও প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত ৮ই জুনের নির্বাচনে বিষয়ে অনুমোদন দেয়। হাউজ অব কমন্সে উত্থাপিত নির্বাচন সংক্রান্ত সংক্রান্ত বিলের পক্ষে ৫২২, বিপক্ষে ১৩ এমপি ভোট দেন। পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর বৃটেনে এখন নির্বাচনের উত্তপ্ত হাওয়া বাইছে।