কামরুন্নাহারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কামরুন্নাহার ও আরিফুল সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সাড়ে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বছরখানেক আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে কামরুন্নাহার ও আরিফুলের মাঝে সমস্যা দেখা দেয়। স্বজনদের অভিযোগ, কামরুন্নাহারের স্বামী আরিফুলই তাঁকে খুন করেছেন। লাশ উদ্ধারের পর থেকেই আরিফুল পলাতক রয়েছেন।
স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে আরিফুল তাঁর শ্বশুর মফিজুল হককে জানান কামরুন্নাহারকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কথা বলেই আরিফুল আশুগঞ্জ বাজারে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে যান। এদিকে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কামরুন্নাহারের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বিকেল চারটার দিকে নিহতের বাবা মফিজুল হকের কথামতো মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির পরিত্যক্ত পানির ট্যাংকের ভেতরে হাত বাঁধা ও মুখে পলিথিন মুড়িয়ে রাখা এবং গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় কামরুন্নাহারের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বশুর আমিনুল হক, শাশুড়ি সেতারা বেগম ও তাদের এক মেয়েকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।
নিহত কামরুন্নাহারের ফুপাতো ভাই শামিম আহমেদ বলেন, ‘সোমবার সকালে মেয়েকে রেখে ঘর থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে কামরুন্নাহার বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে বলে আরিফুল আমাদের জানান। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে মামার (কামরুন্নাহার বাবা) কথামতো আরিফুলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পরিত্যক্ত পানির ট্যাংকে কামরুন্নাহারের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিই।’
নিহত কামরুন্নাহারের বাবা মফিজুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় মেয়ের স্বামী আরিফুলকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছি। তাঁকে গ্রেপ্তার করলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। কামরুন্নাহার তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।’
আরিফুল হকের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এবং তাঁর বাবা-মা থানা-হাজতে আটক থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে আরিফুল হক কামরুন্নাহারকে খুন করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।