মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার দুই জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মামলায় তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আগামী ১১ জুলাই তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ এ আদেশ দেয়। ট্রাইব্যুনালে আজ শুনানি করেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।
প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী সাংবাদিকদের জানান, আজ ট্রাইব্যুনালে দুটি আবেদন করা হয়েছে। একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ৯জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেয় হয় । দন্তের স্বার্থে আনা অপর আবেদনের প্রেক্ষিতে এ মামলায় অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সৈয়দ হায়দার আলী আরও বলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালে জানিয়েছি এই মামলার নয়জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। বাকি দুজন পলাতক রয়েছে।
এই মামলাটি তদন্ত করছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা (অঅইও) মো. হেলাল উদ্দিন।
গত ২০ এপ্রিল রাত থেকে শুক্রবার সকল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে খুলনা থেকে সাতজন এবং ঢাকা ও গাজীপুর থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান মামলাটির আইও মো. হেলাল উদ্দিন।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিগণ হলেন- শেখ আবদুর রহিম (৬৮), শামসুর রহমান গাজী (৮২), জাহান আলী বিশ্বাস (৬৭), মো. শাজাহান সরদার (৬৭), আবদুল করিম শেখ (৬৫), আবু বক্কর সরদার (৬৭),রওশন আলী গাজী (৭২), সোহরাব হোসেন (৬২) ও নাজের আলী ফকির (৬৫)।
আইও হেলাল উদ্দিন বলেন, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সংস্থা এ আসামীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ১৯৭১ সালের ১৮ মে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া গ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আব্দুল লতিফ মোড়ল ও কাওসার শেখসহ ৯ জনকে ধরে বকুলতলা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়। সেখান থেকে জীবন নিয়ে একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। ওই ঘটনায় খর্নিয়া গ্রামের লিয়াকত আলী গাজী বাদী হয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় আনা অভিযোগ এখন তদন্ত সংস্থা তদন্ত করছে।