সারা বিশ্বে শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ আগাম জন্ম

নারী ও শিশু

image_152015.aআগাম জন্ম বা মাতৃগর্ভে ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ করার আগে জন্মগ্রহণ করার ফলে শিশুদের শরীরে যেসব জটিলতা তৈরি হয়, তাতে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু মারা যায়। প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং জন্সহপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের একটি গবেষণা দল যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে সারা পৃথিবীতে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৬৩ লাখ শিশু মারা গেছে, যাদের মধ্যে ১১ লাখ আগাম জন্ম-সংক্রান্ত জটিলতায় মারা গেছে। এতে আরো বলা হয়, ২০১৩ সালে সারা পৃথিবীতে আগাম জন্মের ফলে সৃষ্ট জটিলতায় মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিশুমৃত্যু ঘটে জন্মের প্রথম ২৮ দিনের মধ্যেই।
গবেষকরা শিশু মৃত্যুর অন্যান্য প্রধান কারণগুলোর মধ্যে নিউমোনিয়া, জন্মের সময়ে এবং তার পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট বিভিন্ন জটিলতাকে চিহ্নিত করেন। আগাম জন্ম জটিলতায় প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয় ভারতে। দেশটিতে বছরে গড়ে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি এমন শিশু মারা যায়। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো।
বাংলাদেশেও আগাম জন্ম-সংক্রান্ত জটিলতাই এখন শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওনাটলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোট শিশুমৃত্যুর শতকরা ৪৫ শতাংশই হয় এ-সংক্রান্ত জটিলতায়। কয়েকটি উন্নত দেশেও আগাম জন্ম-সংক্রান্ত জটিলতাই শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
এ-সংক্রান্ত জটিলতার ফলে শিশুমৃত্যুর শতকরা হারের দিক দিয়ে সবচে খারাপ অবস্থায় রয়েছে মেসেডোনিয়া, যেখানে শিশুমৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি ঘটে আগাম জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে স্লোভেনিয়া, ডেনমার্ক, সার্বিয়া, যুক্তরাজ্য ও হাঙ্গেরি। অধ্যাপক শহিদুল্লাহ আরো বলেন, অনুন্নত দেশগুলোতে জীবাণু সংক্রমণসহ নানা কারণে শিশুমৃত্যু হলেও মূলত আগাম জন্মের কারণেই উন্নত দেশগুলোতে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
সূত্র : বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *