ঢাকা; ভয় না দেখিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কী নির্বাচন করেছেন? কোনো বিরোধী দল আপনার নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এখন বিএনপিকে আগামীতে কী করে নির্বাচনে আনবেন, সেই চেষ্টা করুন। নিবন্ধন বাতিলের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। দেশের সর্ববৃহৎ দল বিএনপি নিবন্ধন বাতিলের ভয় করে না। দলের নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার কথা আমরা কখনো চিন্তাও করি না। কিন্তু সেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তো একটা পথ লাগবে। আপনি ক্ষমতায় বসে থাকবেন, সমস্ত কল-কবজা নাড়বেন, ইলেকশন ম্যানিপুলেটেড করবেন, আর আমাদের বলবেন নির্বাচনে আসো, সেটি হবে না। মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অন্যথায় এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। মির্জা আলমগীর বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে ১০টা, কারো ১৫টা, কারো ২০টা, কারো ৪০টা, কারো ১০০টা-১৪০টা মামলা আছে। খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টা মামলা দেয়া হয়েছে। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ৮০টির কাছাকাছি মিথ্যা মামলা। সরকারবিরোধী আন্দোলন থামানোর কৌশল হিসেবে এভাবে মামলা দেয়া হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতা ইলিয়াস আলী পাঁচ বছর ধরে নিখোঁজ। শুধু ইলিয়াস আলী নয়, আমাদের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে। এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন বলে গুম-খুন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। গুম ঘৃণ্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই অপরাধ ক্ষমা করার নয়, যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তারা ক্ষমার যোগ্য নয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করতে ভুটানে গেছেন। কিন্তু তার দেশের রাজনীতিকে যে তিনি পুরোপুরি প্রতিবন্ধী করে রেখে দিয়েছেন, মানুষকে সম্পূর্ণভাবে পঙ্গু করে রেখে দিয়েছেন, সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জায়গায় জায়গায় নতুন কমিটি করা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হোন এবং সংগঠনের শক্তি বাড়ান। সবাই সংগঠিত হয়ে মহল্লায় মহল্লায় কমিটি করতে হবে। বিএনপির দুর্গ গড়ে তুলতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের সরকার গঠন করতে পারি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব বক্তব্য দেন।