যা খেলে গরম লাগবে না

Slider গ্রাম বাংলা বাংলার সুখবর

6fa24abf316a63ece2ef5d9fdb84bc11-58f45e94e0cd6

 

 

 

 

ঢাকা; চারদিকে প্রচণ্ড গরম। ক্লান্তিতে কাজে উৎসাহ পাওয়া যায় না। গরমে হাঁসফাঁস করেন অনেকে। এই গরমে তৃপ্তি এনে দিতে পারে কিছু খাবার। এসব খাবার যেমন পুষ্টিকর, গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। এ ধরনের সহজলভ্য কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন:

.

পুদিনাপাতা
ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করার ক্ষমতা আছে পুদিনাপাতার। ইংরেজিতে যার নাম মিন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘এ’ দ্বারা পরিপূর্ণ পুদিনাপাতা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এমন একটি উপকরণ, যা অতিরিক্ত গরমে ত্বকের ক্ষতি দূর করে। গরমের ঘাম জমে যে ঠান্ডা লেগে যায়, তা প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া বয়সের ভারে বৃদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা করে। ত্বক ও চুলকে সতেজ রাখে। অতিরিক্ত গরমে ছোট-বড় প্রায় সবারই বদহজম বা ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যা দেখা যায়। এই পাতা পেটের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। পিষে, ধনেপাতার মতো তরকারিতে ছিটিয়ে বা কাঁচা সালাদের সঙ্গে খাওয়া যায়।কলা
দিনের খাদ্যতালিকায় কলা কমবেশি সবারই থাকে, তা কাঁচা আর পাকা হোক। উপাদেয়, সস্তা, সারা বছর মেলে—এমন সবজি বা ফলের মধ্যে কলায় রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম। ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’র গুরুত্বপূর্ণ উৎসও কলা। এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, লৌহ ও অন্য কিছু খনিজ উপাদান। কলা পাকা বা কাঁচা দুই অবস্থায়ই খাওয়া যায়। অতিরিক্ত ঘামের শরীর থেকে যে তরল বের হয়ে যায়, তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে পটাশিয়াম। গরমের সময় কলা খেতে পারেন। এ ছাড়া পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে আছে সবুজ শাকসবজি, শুষ্ক ফল ও শস্য।

.

তরমুজ
গরমে যখন প্রাণ আইঢাই, এক ফালি তরমুজ খেয়ে নিন। বরফ দেওয়া শরবতও খেতে পারেন তরমুজের। হাঁপিয়ে যাওয়া প্রাণটা জুড়িয়ে যাবে। তরমুজ গরমেরই ফল। হাটবাজার বা ফলের দোকানে এখন থরে থরে সাজানো থাকে সুমিষ্ট পানিতে ভরপুর তরমুজ। তরমুজে রয়েছ শতকরা ৯১ দশমিক ৫ ভাগ পানি। এতে রয়েছে ক্যানসারপ্রতিরোধী উপাদান লাইকোপেন। প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণে সমৃদ্ধ এই ফল গরমে স্বস্তি দেয়।.

ছবি: প্রথম আলোটমেটো
টমেটোতে রয়েছ শতকরা ৯৪ দশমিক ৫ ভাগ পানি। এ ছাড়া এতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, লাইকোপেন, ক্যারোটিন, রিবোফ্লোবিন, ক্যালসিয়াম ও লোহা থাকে। টমেটোর জুস কিংবা সালাদ দুই সুস্বাদু। এ ছাড়া রান্নার পরও টমেটোর পুষ্টিগুণ কমে না। তাই গরমের সময় টমেটোর স্যুপ কিংবা ঝোল খেতে পারেন।শসা বা ক্ষীরা
শসায় রয়েছে ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ পানি। এই গরমে শসার সালাদ রাখুন প্রতিবেলায়। শসার সঙ্গে ধনেপাতা মেশালে স্বাদ বাড়বে। পাশাপাশি ননিবিহীন দুধের তৈরি দই, পুদিনাপাতা আর বরফ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করতে পারেন। এই জুস আপনার শরীর সতেজ রাখবে এবং তৃষ্ণাও মেটাবে।

.

ঘৃতকুমারী
ঘৃতকুমারী শুনে অনেকে ভুরু কোঁচকালেও কিন্তু একে সবাই অ্যালোভেরা নামে ভালোই চেনেন। ঔষধি এই ভেষজের নানা গুণের কথা পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে এ অঞ্চলের মানুষের জানা। শরীরে নানা প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিতে আর অসুখ-বিসুখ সারিয়ে তুলতে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী অতুলনীয়। এই উদ্ভিদ খাদ্য-পানীয় হিসেবে যেমন কার্যকর, তেমনি তা বাহ্যিকভাবেও ব্যবহারযোগ্য। ঘৃতকুমারীর রস পান করে, সালাদ হিসেবে খেয়ে এবং ত্বক ও চুলে ব্যবহার করে গরমে দারুণ উপকৃত হতে পারেন।পেঁয়াজ
গরমে পেঁয়াজ, বিশেষ করে লাল পেঁয়াজ দারুণ উপকারী। কোয়ারসেটিন নামের এক রাসায়নিক উপাদান আছে এতে, যার অ্যান্টিহিস্টামিন প্রভাব রয়েছে। গরমে হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। পেঁয়াজ এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ফাইটোকেমিক্যালস নামের একটি বিশেষ উপাদান রয়েছে পেঁয়াজে, যা শরীরে ভিটামিন ‘সি’র কার্যকারিতা বাড়ায়। এতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়ে যায়। পেঁয়াজে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘ই’র মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর। এতে ত্বক সুস্থ থাকে। ত্বক ভালো রাখতে বেশি করে খাবারে পেঁয়াজ রাখা উচিত।

লাল মরিচ
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লুক লাবোর্ড বলেন, ঝালযুক্ত খাবার রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে বেশি ঘাম সৃষ্টি করে। ঘাম শুকালে তখন শরীর ঠান্ডা হয়। লাল মরিচে যে ক্যাপসিসিন থাকে, তা শরীরের তাপমাত্রা না বাড়িয়ে বেশি ঘাম সৃষ্টি করে। নতুন এক গবেষণার বরাত দিয়ে জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিদিন লাল মরিচ খেলে মৃত্যুর হার হ্রাস করে। হৃদ্‌রোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার হারও ১৩ শতাংশ কমে যায়। যাঁরা নিয়মিত লাল মরিচ খান, তাঁদের কোলেস্টেরল কম থাকে। তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, ডেইলি মেইল, জিনিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *