নন-নিউক্লিয়ার বোমা :কেমন তার ধ্বংস ক্ষমতা?

Slider তথ্যপ্রযুক্তি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাবিশ্ব

 

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশে আচিন জেলার মোমান্দ এলাকায় আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তে পার্বত্য  গুহা ও টানেলে অবস্থিত আইএসের আস্তানা লক্ষ্য করে বৃহৎ নন-নিউক্লিয়ার বোমা নিক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বোমার আঘাতে ৩৬ আইএস জঙ্গি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আফগান সরকার দাবি করছে, এ হামলায় কোনো বেসামরিক নিহত হয়নি।

৩০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৯ হাজার ৮০০ কেজি ওজনের বোমাটি গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম(জিপিএস) দ্বারা পরিচালিত। এটিকে লক্ষ্যস্থলে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এমসি-১৩০ কার্গো বিমান ব্যবহার করা হয়।

বোমার বৈশিষ্ট্য

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ অ-পারমাণবিক বোমা এটি। এর ধ্বংস ক্ষমতা খুব বেশি নয়। কিন্তু অনেক বড় এলাকাজুড়ে শব্দ, ধোয়া এবং বিস্ফোরণের ধাক্কা ছড়িয়ে দিতে পারে। সব দিকে এক মাইল এলাকা পর্যন্ত বিস্ফোরণের তরঙ্গ ছড়িয়ে দিতে পারে এটি। ফলে বোমাটি শত্রুর মধ্যে ভীতি সঞ্চারের জন্য ব্যবহার করা হয়।

একটির ওজন ৯ হাজার ৮০০ কিলোগ্রাম। হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়ে এর ওজন বেশি। প্রতিটি তৈরিতে খরচ পড়ে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মূদ্রায় ১২৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এতে রয়েছে ১১ টন ট্রাই-নাইট্রো টলুইন (টিএনটি) বিস্ফোরক। পাতলা অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বিস্ফোরক মোড়ানো থাকে ফলে বিস্ফোরণের মাত্রা বাড়ে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অবশ্য এটিই যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অ-পারমাণবিক বোমা নয়। মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে বাঙ্কার বিধ্বংসী যে বোমাটি রয়েছে সেটির নাম ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্র্যাটর (MOP) যার ওজন ১৩ হাজার ৬০৮ কেজি।

সবদিকে এক মাইল এলাকাজুড়ে বিস্ফোরণের ধাক্কা অনুভূত হয়। আর বিস্ফোরণের ৩০০ ফুট এলাকার মধ্যে কোনো প্রাণি থাকলে তৎক্ষণাত বাষ্পে পরিণত হবে। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম এটি পরীক্ষা করে। বোমাটি লম্বায় ৩০ ফুট(৯ মিটার) এবং প্রস্থ (ব্যাস) ৪০ ইঞ্চি(এক মিটার)।

বহন ও হামলার প্রক্রিয়া

বড় ধরনের কার্গো বিমানে এটি বহন করে লক্ষ্যবস্তুর উপরের আকাশে নেয়া হয়। একটি প্যালেটের উপর বসানো থাকে। প্যারাসুট দিয়ে প্যালেটটি বাইরে টেনে নেয়া হয় ফলে বোমাটি বাইরে চলে আসে। লেজের দিকে পাখা আছে। স্বাভাবিক অবস্থায় গুটানো থাকে। বোমার ছোড়ার পর পাখাগুলো খুলে যায় এবং গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে।

বিমান থেকে বাইরে আসার পরপরই প্যালেটটি পৃথক হয়ে যায়, বোমার পাখাগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। খাড়া নিচের দিকে পড়তে থাকে। তখন উপগ্রহের মাধ্যমে আংশিকভাবে এর গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করা হয়।

ভূমি থেকে ছয় ফুট উপরে বিস্ফোরিত হয়।

রাশিয়াও এ ধরনের বৃহৎ অ-পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছে। তারা নাম দিয়েছে ‘ফাদার অব অল বম্বস’ (FOAB)। তবে এটি একটু আলাদা ধরনের। এগুলো মূলত ফুয়েল এয়ার বম্ব। কারিগরি নাম থার্মোব্যারিক ওয়েপন।

এ ধরনের বোমার বিস্ফোরণ ঘটে দুই ধাপে। প্রথমে ছোট একটি বিস্ফোরণে বিস্ফোরক দ্রব্যের একটি মেঘ তৈরি হয় যা মূল বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটতে সহায়তা করে। এই বোমাগুলো মূলত ব্যাপক বিধ্বংসী চাপ-তরঙ্গ তৈরি করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বোমাটি তৈরি করেছে অ্যালবামাভিত্তিক অ্যারোনটিকস কোম্পানি ডাইনেটিকস (Dynetics)।

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *